Advertisement
E-Paper

‘ডোকরা’র টানে আমস্টারডাম থেকে দ্বারিয়াপুরে শিল্পী

শিল্পকর্মের টানে কয়েক হাজার কিলোমিটার উজিয়ে এসেছেন তিনি। ভিন্‌-দেশের এক গ্রামে পড়ে থেকে শিখছেন কাজ। আর তা করতে গিয়ে ভালবেসে ফেলেছেন গ্রামের মানুষজন, খাবারকেও।

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১০
নিমগ্ন: শিল্প-কৌশল শিখছেন টিম ব্রুকার্স। নিজস্ব চিত্র

নিমগ্ন: শিল্প-কৌশল শিখছেন টিম ব্রুকার্স। নিজস্ব চিত্র

শিল্পকর্মের টানে কয়েক হাজার কিলোমিটার উজিয়ে এসেছেন তিনি। ভিন্‌-দেশের এক গ্রামে পড়ে থেকে শিখছেন কাজ। আর তা করতে গিয়ে ভালবেসে ফেলেছেন গ্রামের মানুষজন, খাবারকেও। পূর্ব বর্ধমানের দ্বারিয়াপুর গ্রামের ডোকরাপাড়াই এখন নেদারল্যান্ডের শিল্পী টিম ব্রুকার্সের ঠিকানা।

নভেম্বরে টিম উঠেছেন কলকাতায়, বালিগঞ্জে এক বন্ধুর কাছে। সেখান থেকেই মাঝেসাঝে দ্বারিয়াপুরে আসেন আমস্টারডামের বাসিন্দা বছর বত্রিশের এই শিল্পী। কিন্তু হঠাৎ এত দূর থেকে বাংলার এই গ্রামে ডোকরা শিল্পী শুভ কর্মকারের কাছে ছুটে আসা কেন? টিমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তিনি ‘লস্ট-ওয়াক্স’ পদ্ধতিতে আমস্টারডামে তাঁর স্টুডিওয় বসে কাজ করেন। প্রায় এই ধরনের পদ্ধতিতেই কাজ করেন ডোকরাশিল্পীরাও। ভবিষ্যতে নিজের হাতে ডোকরা শিল্পের কাজ করবেন বলে জানান টিম। তা নিয়ে প্রদর্শনীরও ইচ্ছা রয়েছে। আর তাই, আগ্রহ তৈরি হয় এই গ্রামে আসার। গ্রামে এলে আর্টিজেন কো-অপারেটিভ সোসাইটির অতিথি নিবাসে থাকেন এই তরুণ।

ছাত্রকে পেয়ে খুশি শুভবাবুও। তিনি জানান, কলকাতার একটি সংস্থার মাধ্যমে টিমের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, শুভবাবু, রিনা কর্মকার-সহ অন্যান্য ডোকরা শিল্পীরা হাতে ধরে কাজ শেখাচ্ছেন টিমকে। সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত এই কাজ চলে। মাটির মণ্ড, ছাঁচ তৈরি থেকে পিতল গলানো, পালিশ সবকিছুই শেখানো হচ্ছে টিমকে, জানান শুভবাবু। আপাতত, আগামী বছর জানুয়ারি পর্যন্ত টিমের এই প্রশিক্ষণ পর্ব চলবে।

শিল্পকর্ম শেখার পাশাপাশি গ্রামের পরিবেশকে ভালবেসে ফেলেছেন টিম। কী তা? বাঙালির খাদ্যাভাসও ইতিমধ্যেই রপ্ত ফেলেছেন বলে জানান টিম। ‘ফুচকা’ বিশেষ পছন্দ এই সাহেবের, জানান রিনাদেবী। গ্রামবাসীদের সঙ্গে এক পাতে বসে খাওয়াদাওয়া, আড্ডা দেওয়াও চলছে জোরকদমে।

‘বসিং মেশিন’, ছেনি, হাতুড়ি হাতে টম মুগ্ধ ডোকরার কারিগরিতে। তাঁর কথায়, ‘‘এই শিল্পের বিশেষত্ব রয়েছে কাঁচামাল, ডিজাইন, শিল্প-কৌশল, সব কিছুতেই।’’ নেদারল্যান্ডের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষক টম। তিনি জানান, ডিসেম্বরে স্ত্রী-ও ভারতবর্ষে আসবেন। ডোকরা শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও আশাবাদী এই ভিন্-দেশি শিল্পী।

টমের গ্রামে আসাকে স্বাগত জানিয়ে বিডিও (আউশগ্রাম ১) চিত্তজিৎ বসু বলেন, ‘‘ভ্যান গগের দেশের শিল্পীকে পথ দেখাচ্ছেন বাংলার শিল্পীরা, এটা আমাদের জন্য গর্বের। ভবিষ্যতে আরও বিদেশি শিক্ষার্থী ও পর্যটক যাতে এখানে আসেন, তার জন্য ডোকরাপাড়াকে আধুনিক করে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হবে।’’

Dhokra Handicrafts Netherlands India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy