বর্ধমানে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
গত পঞ্চায়েত ভোটের মতো ‘সহজ’ নির্বাচন এর পরে হবে না, পূর্ব বর্ধমানের নানা পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে এমন বার্তা দিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সে জন্য এখন থেকে বুথ আগলানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, পরামর্শ জেলা নেতৃত্বের। সে সঙ্গে, দলের ব্লক সভাপতি কে হবেন বা ব্লক কমিটি কী হবে, তা নিয়েও ‘চিন্তা’ করতে বারণ করলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই সভা থেকে জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের কিছু কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। শুক্রবার টাউন হলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের তৈরি সামগ্রী বিক্রির জন্য মেলার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। তৃণমূল সূত্রের খবর, তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ‘বয়কট’ করেন জেলা পরিষদের অনেকে। সে প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী রয়েছেন যে অনুষ্ঠানে, তা জেলা পরিষদ বয়কট করবে, ভাবতে পারিনি! এতে তো সরকারেরই মুখ পুড়ল। এটা ঠিক হয়নি।’’ এ নিয়ে কথা বলতে চাননি জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা।
জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ এ দিন বলেন, “প্রতিটি ব্লকের প্রতিনিধি নিয়ে জেলা কমিটি গঠন হবে। ব্লক সভাপতি কে হবেন বা কমিটি কাদের নিয়ে গঠন করা হবে, তা নিয়ে নজরদারি রয়েছে। তা বিশ্লেষণ করে, নিশ্চিত ভাবে সাংগঠনিক লোককেই দলের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে মনে করি।’’ আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম ছাড়া জেলার বাকি ১৮টি পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭০২ জন সদস্য রয়েছেন। জেলা পরিষদের সদস্য ৪৩ জন। এ তথ্য জানিয়ে দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপনের প্রশ্ন, “বুকে হাত দিয়ে জনপ্রতিনিধিরা কী বলতে পারবেন, তাঁর এলাকায় ক’টা বুথে দল জিতেছে? এ নিয়ে বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে।’’ জেলা পরিষদ সহ-সভাধিপতি তথা রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডুর সতর্কবার্তা, ‘‘মাথার উপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন। কিন্তু ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে অনেক সময়ে আমাদের দেখেও ভোট হয়। আমরা খারাপ আচরণ করলে, মানুষ ভোট দেবেন না।’’
বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক দাবি করেন, ‘‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট-পর্বের খেসারত লোকসভা ভোটে দিতে হয়েছিল। তার পুনরাবৃত্তি আর হবে না। বিধানসভা নির্বাচনে গ্রামে প্রচার করতে গিয়ে দেখেছি, নিচুতলায় মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। এখন থেকে মানুষকে বোঝাতে না পারলে, পঞ্চায়েত নির্বাচন খুবই কঠিন হবে।’’ একই সুর শোনা যায় আরও কয়েক জন বক্তার গলাতেও। তাঁরা দাবি করেন, বিধানসভা ভোটেও বুথের ফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, অনেক বুথে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। নেতাদের একাংশের দাবি, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের অনেক সদস্য ভোট-পর্বে ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিলেন। জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘দলের সভা সত্ত্বেও অনেকে আসেননি। দলের নির্দেশে হাজিরা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা আসেননি, তাঁদের সম্পর্কেও দল ভাববে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy