এই বাড়ি তৈরির পরেও আবাস যোজনার সুবিধাভোগীদের মধ্যে পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রীর নাম! —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত প্রধানের পাকা বাড়ি তৈরি হচ্ছে। সেটাও আবার দোতলা। তবু আবাস যোজনায় তাঁর স্ত্রীর নাম রয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রী বলছেন, ‘‘সরকারি বাড়ি চাই না।’’ কিন্তু কী ভাবে তাঁর নাম এল আবাস যোজনার তালিকায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। সরব গ্রামবাসীরাও। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের গলসির পারাজ গ্রাম।
গলসির পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাজাহান শেখ। তাঁর যে বাড়িটি তৈরি হচ্ছে, সেটি বেশ বড়সড়। কয়েক মাস ধরে নির্মীয়মাণ পাকা বাড়ির ‘আন্ডার গ্রাউন্ডে’ পরিবার নিয়ে বাস করছেন পঞ্চায়েত প্রধান। এর মধ্যে আবাস যোজনার তালিকায় (সিরিয়াল নম্বর: ১৪০৪৯৯৪৫০) সাজাহানের স্ত্রী ববিতা বেগমের নাম রয়েছে। এখন প্রশ্নের মুখে ওই বাড়িটি নিতে চান না বলে জানিয়েছেন ববিতা। কিন্তু তাতে বিতর্ক থামেনি।
ওই গ্রামের এক বাসিন্দা বাপি মণ্ডলের কথায়, ‘‘২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ করে একটি ‘আন্ডার গ্রাউন্ড’-সহ দোতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন পঞ্চায়েত প্রধান। গ্রামের বহু গরিব মানুষ সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাচ্ছেন না। তবে প্রধান নিজের পরিবারের নামে বাড়ি করে নিচ্ছেন। বাকি কে পেল না পেল, সেটা দেখার প্রয়োজন বোধ করছেন না প্রধান।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘আমরা চাই, গরিব মানুষ বাড়ি পাক। আর তালিকা থেকে প্রধানের স্ত্রীর নাম বাতিল হোক।’’ একই ভাবে গ্রামবাসীদের একটি বড় অংশ প্রধানের আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কী ভাবে এত বড় বাড়ি তিনি তৈরি করছেন, তা নিয়ে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরাও। বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এটা অবাস্তব কিছু নয়। চুরি করাই তো তৃণমূলের ছোট-বড়, সব নেতার কাজ।’’
অন্য দিকে, পঞ্চায়েত প্রধানের যুক্তি, ২০১৮ সালে তাঁর মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। সেই সময় পঞ্চায়েতের ‘স্টিয়ারিং কমিটি’ তাঁর নাম পাঠিয়েছিল। এখন তিনি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করছেন। যতটা কাজ অবশিষ্ট আছে, তা ধীরে ধীরে করবেন। তবে আবাস যোজনায় তাঁর স্ত্রীর নাম থাকা নিয়ে সাজাহান বলেন, ‘‘বর্তমানে আমার ওই সরকারি বাড়িটার প্রয়োজন নেই। বাড়ির তদন্তে আসা সরকারি কর্মীদের বলেছি স্ত্রীর নাম বাদ দিয়ে দিতে। আমি চাই, ওই বাড়িটা কোন গরিব মানুষ পান।’’
প্রধানের স্ত্রী ববিতা বেগমও একই কথা বলছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ব্যাঙ্ক থেকে মোট সাড়ে ৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি শুরু করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy