E-Paper

র‌্যাগিং রুখতে শৃঙ্খলা কমিটি গড়ার নির্দেশ

দুপুরে জেলাশাসকের ঘরে জেলার অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটির বৈঠকে বর্ধমানের মতো বড় বিশ্ববিদ্যালয় কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা রেজিস্ট্রারের কাছে জানতে চান জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ০৭:২৫
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

উপাচার্য ও আহ্বায়ক না থাকায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি অকেজো। কেউ দায়িত্বে না থাকায় যাদবপুরের ঘটনার পরেও ওই কমিটির বৈঠক হয়নি। বুধবার জেলার অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বা কর্মসচিব সুজিত চৌধুরী। এ বার জেলা প্রশাসনের পরামর্শ মেনে র‌্যাগিং সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য শৃঙ্খলা-কমিটি বা ডিসিপ্লিনারি কমিটি গঠন করবে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে র‌্যাগিং বিরোধী সচেতনামূলক সভায় পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘র‌্যাগিং কোনও ভাবেই কাম্য নয়। র‌্যাগিংয়ের কোনও অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। তাতে অভিযুক্তদের ভবিষ্যত গড়ার ক্ষেত্রে কালো দাগ পড়বে।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহী বলেন, ‘‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটি রয়েছে। কিন্তু কমিটির মাথায় উপাচার্য নেই। আহ্বায়কও নেই। সে জন্য বৈঠক ডাকার দায়িত্ব আমায় দেওয়ার কথা হয়। কিন্তু অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটি ইউজিসির নির্দেশে বিধিবদ্ধ। উপাচার্য ছাড়া ওই কমিটির বৈঠক ডাকার অধিকার কারও নেই।’’ কয়েক দিনের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা-কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমাদের কথা হয়েছে। হস্টেলগুলির প্রতিটি ঘরে নম্বর লেখা হয়ে গিয়েছে। এ বার ওই সব ঘরে কোন কোন ছাত্র-ছাত্রী থাকবেন, সেটাও প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

এ দিন দুপুরে জেলাশাসকের ঘরে জেলার অ্যান্টি-র‌্যাগিং কমিটির বৈঠকে বর্ধমানের মতো বড় বিশ্ববিদ্যালয় কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা রেজিস্ট্রারের কাছে জানতে চান জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। জেলার কলেজগুলির পদক্ষেপ ইতিবাচক হলেও বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে রয়েছে বলে, দাবি করা হয়। কারণ জানার পরে জেলাশাসক শৃঙ্খলা-কমিটি গঠন করতে বলেন। যাতে র‌্যাগিং বা ছাত্র-বিরোধী কোনও অভিযোগ উঠলে ওই কমিটি নজরদারি চালাতে, অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পারে। বৈঠকে পুলিশ সুপার দাবি করেন, অনেক আবাসিকের নামে তাঁদের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। রেজিস্ট্রারও জানান, অনেক ছাত্রই কোর্স পাল্টে হস্টেলে থাকে। জেলাশাসক তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় আগেই সাত দিনের মধ্যে হস্টেল থেকে বহিরাগতদের চলে যেতে বলেছিল। সেই সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। সহ-উপাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘রিপোর্ট পাওয়ার পরে এ মাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হবে।’’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘১৪-১৫ জন বদমায়েশি করছে বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। বিস্তারিত তদন্ত করা হবে।’’ এ দিনের সভায় স্নাতকোত্তর স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা হাজির ছিলেন। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘অপরিণত কেউ নেই। দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের দায়িত্ব বেশি রয়েছে। পেশাকে লক্ষ্য করে এগিয়ে যেতে হবে। র‌্যাগিং থেকে দূরে থাকতে হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মণিকাঞ্চন মণ্ডল, হস্টেলের আবাসিক আকাশ গড়াই, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শিল্পী মল্লিকেরা বলেন, ‘‘একটি ঘট চনায় সবাই আলোড়িত। এটা যেন স্তিমিত না হয়। নবীন বরণের অনুষ্ঠানের সময় র‌্যাগিং-বিরোধী সভা হলে ভাল। একই সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন র‌্যাগিং বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ায় অনেকেই অভিযোগ করার সাহস পাবেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kanksa Ragging

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy