Advertisement
০৫ মে ২০২৪
দ্বন্দ্বই চিন্তা জামুড়িয়ায়

১৩ আসনে ৩০ প্রার্থী তৃণমূলের

এ বার জামুড়িয়ায় পঞ্চায়েত সমিতি থেকে নানা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন আসনে কোথাও দু’জন, আবার কোথাও তিন জন তৃণমূলের হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘কিছু নেতা-কর্মী ঠিক আচরণ করছেন না। তাঁরা নিজেদের শুধরে না নিলে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’

জটলা: তখনও মনোনয়ন সংক্রান্ত নির্দেশ বাতিলের খবর আসেনি। বুধবার দুর্গাপুরে মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে। নিজস্ব চিত্র

জটলা: তখনও মনোনয়ন সংক্রান্ত নির্দেশ বাতিলের খবর আসেনি। বুধবার দুর্গাপুরে মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে। নিজস্ব চিত্র

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৭
Share: Save:

ভোট আসতেই ফের তৃণমূলের অন্দরে কোন্দলের ছায়া জামুড়িয়ায়।

দু’বছর আগে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের হারের পরে আঙুল উঠেছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে। তা সামাল দিতে নানা পদক্ষেপ করেছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। আর দ্বন্দ্ব নেই, এমন দাবিও করা হয়েছিল। কিন্তু, এ বার জামুড়িয়ায় পঞ্চায়েত সমিতি থেকে নানা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন আসনে কোথাও দু’জন, আবার কোথাও তিন জন তৃণমূলের হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘কিছু নেতা-কর্মী ঠিক আচরণ করছেন না। তাঁরা নিজেদের শুধরে না নিলে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’

২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শিবদাসন হেরে যাওয়ার পরে জামুড়িয়া ১ ও ২ ব্লকে পুরোনোদের সরিয়ে দলের নতুন সভাপতিদের পদে বসানো হয়। এ ছাড়া কিছু নেতাকে নিষ্ক্রিয়ও করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য তাঁদের কয়েকজনকে ফেরানো হয়েছে। জানুয়ারিতে জেলা সম্মেলনে তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেন, দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নে উঠে এসেছে অন্য ছবি।

জামুড়িয়ায় পঞ্চায়েত স্তরে ৯৩টি আসনে তৃণমূলের ১৫৮ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। চিচুড়িয়া ও শ্যামলা পঞ্চায়েতে বেশিরভাগ আসনে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে না পারায় সেগুলি তৃণমূলের দখলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের অনেক আসনে তৃণমূলের সঙ্গে দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে দাঁড়ানো প্রার্থীর লড়াই হতে পারে। পঞ্চায়েত সমিতির ২৩টি আসনের মধ্যে দশটিতে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দেয়নি। রয়েছেন শুধু তৃণমূলের প্রার্থীরা। কিন্তু বাকি ১৩টি আসনে তৃণমূলের ৩০ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। জেলা পরিষদের দু’টি আসনে তৃণমূলের তিন জন প্রার্থিপদ পূরণ করেছেন।

গত পঞ্চায়েত ভোটে চিচুড়িয়া পঞ্চায়েতে পাঁচটি আসনে মূলত লড়াই হয়েছিল তৃণমূল এবং দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে দাঁড়ানো প্রার্থীদের মধ্যে। পরে ওই নির্দলদের সমর্থনে দলের মতের বিরুদ্ধেই প্রধান নির্বাচন হয়। এ বারও নানা পঞ্চায়েতে সেই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কায় তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের প্রবীণ এক নেতা দাবি করেন, “বহু চেষ্টা করেও দলের দ্বন্দ্ব মিটছে না। ব্লক কার্যালয়ের দু’কিলোমিটার দূরে কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তা পাহারায় ছিলেন, যাতে দলের বাকিদের আটকানো যায়। তাতেও লাভ হয়নি।”

জেলা সভাপতি শিবদাসন জানান, দলের অনুমতি ছাড়া মনোনয়ন জমা দেওয়া কর্মীরা তা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে আশা করছেন তাঁরা। তবে ক্ষমতার লোভে দলের একাংশ দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখতে চাইছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শুধু নিজেরা মনোনয়ন জমা দেওয়া নয়, বিরোধী নেতাদের ফোন করে প্রার্থী দিতে কয়েকজন উৎসাহ দিয়েছেন বলেও আমাদের কাছে খবর রয়েছে। আচরণ না পাল্টালে ঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE