Advertisement
E-Paper

প্রার্থী তুলতে ‘চাপ’, নালিশ পাল্টা হুমকির

সিপিএমের অভিযোগ, মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য কাঁকসার বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের নানা ভাবে চাপ দিয়েছে তৃণমূল। মাধবমাঠে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী কাজল মেটের বাড়ি ঘিরে হুমকি দেওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ১১:২৭
কাঁকসায় মহিলা সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতে হামলার নালিশে জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

কাঁকসায় মহিলা সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতে হামলার নালিশে জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

সকাল থেকে কারও বাড়ি ঘিরে রাখা। কারও বাড়ির সদস্যকে তুলে নিয়ে গিয়ে হুমকি। মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর জন্য বিরোধী প্রার্থীদের উপরে এ ভাবেই চাপ তৈরি করার অভিযোগ উঠল কাঁকসা, সালানপুর-সহ জেলার নানা প্রান্তে। তৃণমূলের যদিও দাবি, কাউকে কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। বিরোধীদের অনেকে নিজেরাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

সিপিএমের অভিযোগ, মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য কাঁকসার বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের নানা ভাবে চাপ দিয়েছে তৃণমূল। মাধবমাঠে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী কাজল মেটের বাড়ি ঘিরে হুমকি দেওয়া হয়। আড়রা গ্রামে প্রার্থী নন্দ মুর্মু ও অলোক সাহাকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁদের ছেলেদের দুষ্কৃতীরা তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বিকেলে তাঁরা ফিরে আসেন।

ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের পিয়ারিগঞ্জে বিদায়ী সিপিএম প্রধান কাজল বাউরি এ বার পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার পরিবারের লোকজনকে হুমকি দেয়। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ের সদ্য বিয়ে হয়েছে। বাড়িতে লোকজন রয়েছে। ওরা ঘরে ঢুকে পড়ে। আমি শৌচাগারে স্নান করছিলাম। তবে অনেকে বেরিয়ে আসতেই দুষ্কৃতীরা পালায়।’’ স্থানীয় সিপিএম নেতা দেউল সরকারের অভিযোগ, ‘‘দু’টি গাড়িতে করে বনকাটির কয়েকজন তৃণমূল কর্মী এসে অশান্তি পাকায়।’’ প্রতিবাদে কিছুক্ষণ পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক অবরোধও করে সিপিএম। পুলিশ গিয়ে তা তুলে দেয়। তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমের লোকজন হামলা চালিয়ে তাদের কর্মীদের গাড়ির কাচ ভেঙে দিয়েছে।

বিকেলে পিয়ারিগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী মঙ্গল মুর্মু অভিযোগ করেন, সিপিএমের লোকজন তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে। সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, ওই এলাকায় পঞ্চায়েতের প্রার্থী মনি হাঁসদাকে মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়ে‌ছে। শনিবার মনিদেবীর স্বামী শিবু হাঁসদা অভিযোগ করেন, তাঁদের ছেলে বিশ্বভারতীতে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বৃহস্পতিবার তাঁর হস্টেলে গিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হুমকি দেয়, মা ভোটে লড়াই করলে হস্টেল ছাড়তে হবে। শিববাবু দাবি করেন, ‘‘বিষয়টি দলকে জানাই। শেষে মনোনয়ন তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে আমার স্ত্রী।’’ যদিও, তৃণমূল হুমকির কথা মানতে চায়নি।

আসানসোলের সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরী অভিযোগ করেন, সালানপুরের দেন্দুয়ায় সিপিএম প্রার্থীদের কারও দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে, কারও বাবাকে চাপ দেওয়া হয়েছে। জিৎপুর-উত্তররামপুরের পঞ্চায়েত সমিতির দুই প্রার্থী তৃপ্তি ভট্টাচার্য ও রীতা মুখোপাধ্যায়কেও হুমকি দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়েছে। একই ভাবে কল্যা, জেমারি, সামডির ছ’জনকে শনিবার মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি। বিজেপির বারাবনি ব্লক সভাপতি অরিজিৎ রায় দাবি করেন, ‘‘নুনি, ইটাপাড়ায় তৃণমূলের লোকজন আমাদের প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে মনোনয়ন তোলানোর চেষ্টা করেছিল। তবে সফল হয়নি।’’

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘নির্যাতন ভোগ করে কেউ ভোটে লড়ুন, আমরা সেটা চাই না। যতটা পেরেছি প্রার্থীদের পাশে থেকেছি। তার পরেও কোনও কারণে যদি কেউ শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে না পারেন, মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়াই শ্রেয়। বিভিন্ন দিক মাথায় রাখতে হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ধোবাঘাটা, মোবারকগঞ্জেও প্রার্থীদের নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘কাঁকসায় মনোনয়ন জমা দিতে কী ভাবে বাঁশ, লাঠি নিয়ে সিপিএমের লোকজন এসেছিল তা সবাই দেখেছেন। সংগঠনের বালাই নেই, তাই অশান্তি পাকিয়ে টিকে থাকার লড়াইয়ে নেমেছে সিপিএম।’’ হুমকি দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনও।

West Bengal Panchayat Elections 2018 TMC BJP Candidates
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy