‘লকডাউন’-এর জেরে স্কুল বন্ধ। থমকে নাচ, গান, আঁকা শেখার ক্লাসও। ঘরে ‘বন্দি’ থাকতে থাকতে অনেক কমবয়সীরই মন-মেজাজ খারাপ। তাদের সৃষ্টিশীল কাজে ব্যস্ত থাকার উপায় বাতলাতে উদ্যোগী হয়েছে ‘ভারত স্কাউট অ্যান্ড গাইড’। বাড়িতে বসেই হাতের কাজ, হাত ধোওয়া, গাছ লাগানো, প্লাস্টিক বর্জনের মতো বিষয়ে ওই ছেলেমেয়েদের ব্যস্ত রাখছেন তাঁরা। এতে বর্ধমান সদরের হাজার খানেক পড়ুয়ার সচেতনতা বাড়ছে আবার মনও ভাল থাকছে, দাবি সংগঠনের।
গত ২৭ মার্চ ‘ভারত স্কাউট অ্যান্ড গাইড’-এর জাতীয় কেন্দ্র থেকে এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। এই নির্দেশিকায় স্কাউট অ্যান্ড গাইডের সদস্য বালক-বালিকা, কিশোর-কিশোরীদে বিভিন্ন ‘চ্যালেঞ্জ’ দেওয়া হয়। সেগুলি সম্পূর্ণ করে ‘সোশ্যাল সাইটে’ ‘আপলোড’ করতে হবে, যাতে অন্যরাও সচেতন হতে পারে। ‘সংকল্প’ নামে এই প্রকল্পে চারটি দল গড়া হয়েছে। প্রতি দলে চারটি করে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মোট আটটি কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। চ্যালেঞ্জের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে করোনা নিয়ে সচেতনতা। একটি দলের প্রত্যেক সদস্য তাদের পাঁচ জন বন্ধু বা প্রিয় জনকে ফোন করবে। ফোনেই করোনা নিয়ন্ত্রণে ঘরে থাকা, হাত ধোওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে সতর্ক করতে হবে তাদের। আবার প্লাস্টিকের ব্যবহার বর্জন করা নিয়ে সচেতনতা, বাতিল সামগ্রী দিয়ে ব্যাগ-সহ নানা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বানানো, বাগান করা, রান্না করে সপরিবারে খাওয়ার মতো কাজও রয়েছে। কচি-কাঁচারা নিজেরাই এই কাজ করে ‘আপলোড’ করবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা পাঠাতে হবে স্কাউটের গ্রুপেও।
সংগঠনের সদস্যদের দাবি, এই কর্মসূচির ফলে এক দিকে যেমন ভাল কাজে পড়ুয়ারা নিয়োজিত থাকছে একই সঙ্গে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটছে। সচেতনতার কাজও হয়ে যাচ্ছে। ভারত স্কাউট অ্যান্ড গাইডের জেলা আধিকারিক জিতেন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রায় ১২০০ শিশু, কিশোর এই প্রকল্পে যোগ দিয়েছে। পুরো লকডাউন পর্ব জুড়েই এই কাজ চলবে।’’ তাঁর দাবি, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এই সংগঠনের ২৫-৪০ বছরের স্বেচ্ছাসেবকদের একটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে তাঁরা সমাজের প্রয়োজনে কাজ করতে পারেন।