Advertisement
E-Paper

বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু নিয়ে বিতর্ক

শুরুর দিন থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা নিয়ে কড়াকড়ি ছিল না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। কোনও হাজিরা খাতাও ছিল না। পড়ুয়াদের হাজিরা খাতায় শিক্ষকের সই ছিল তাঁদের উপস্থিত থাকার প্রমাণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৪৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুরুর দিন থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা নিয়ে কড়াকড়ি ছিল না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। কোনও হাজিরা খাতাও ছিল না। পড়ুয়াদের হাজিরা খাতায় শিক্ষকের সই ছিল তাঁদের উপস্থিত থাকার প্রমাণ।

শিক্ষাকর্মী বা আধিকারিকদের ক্ষেত্রে হাজিরা খাতা থাকলেও অনেক সময়েই আগের দিনেরটা পরের দিন বা খাতায় ঠিক সময় করে দেওয়ার ঘটনা ঘটত। এ সবেই বেড়ি পরাতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করায় উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। সময় চুরি রুখতে ও কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সে পথে হাঁটছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ও। যদিও বিভিন্ন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠন এই পদ্ধতি নিয়ে সবর হয়েছেন। গত দশ দিন ধরে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতির ‘ট্রায়াল’ চলছে। কবে থেকে পাকাপাকি ভাবে তা চালু হবে তা বলতে চাইছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, পাকাপাকি ভাবে এই ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত বিভাগকে হাজিরা খাতা রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজবাটি চত্বরে নতুন ও পুরনো ভবনে, ফিনান্স বিভাগে, কলেজসমূহের পরিদর্শক (আইসি) ভবনের সামনে বায়োমেট্রিক যন্ত্র লাগানো রয়েছে। গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে ২২টি যন্ত্র লাগানো হয়েছে। হাজিরায় নজর রাখতে নতুন করে ৩৫টি সিসি ক্যামেরাও বসেছে। সব মিলিয়ে হাজিরায় ‘চুরি’ রুখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেড় কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রতিটি কর্মীকে নির্দিষ্ট বিভাগের সামনে থাকা যন্ত্রে আঙুলের ছাপ দিতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সেই তথ্য বিভাগীয় প্রধানের কাছে পাঠানো হবে। তিনি তা দেখে রিপোর্ট দেবেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন ২৫৪ জন আর শিক্ষাকর্মী-আধিকারিক মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ৭৮২ জন। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সংগঠনগুলি মনে করছে, হাজিরায় স্বচ্ছতা চালু করতে গিয়ে কর্মীদের কাছ থেকে ‘কাজ’ হারাবে কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষাকর্মী সংগঠনের নেতা বুদ্ধদেব চক্রবর্তী বলেন, “আমরা তো কর্পোরেট সংস্থায় কাজ করি না। আবার ১০টা-৫টা ডিউটিও করি না। আগে আসতে হয়, আবার কাজের নিরিখে রাতে ফিরতে হয়। এই পদ্ধতি চালু হয়ে গেলে আসা-যাওয়াই হবে। কাজ হবে না।’’ শিক্ষকেরা জানান, কলকাতা-যাদবপুর-প্রেসিডেন্সির মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এই পদ্ধতি চালু করেনি। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় চালু করলেও মাত্র তিন জন শিক্ষক ওই পদ্ধতি মেনে হাজিরা দিচ্ছেন। তবে ডায়মন্ড হারবারের মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি পুরোপুরি চালু হয়ে গিয়েছে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ শতাংশের বেশি শিক্ষক ‘ওয়েবকুটা’র সদস্য। ওই সংগঠনের কর্তা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শুরুর দিন থেকে আমাদের কোনও হাজিরা খাতা ছিল না। পড়ানোর মাধ্যমেই আমাদের হাজিরা টের পায় পড়ুয়ারা। এখানে শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস নেন। কর্তৃপক্ষের বোঝা উচিত, শিক্ষকেরা পঠন-পাঠনের বাইরেও গবেষণার কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কাজে শিক্ষকদের জড়িয়ে থাকতে হয়। সেখানে শিক্ষকদের কী বাঁধাধরা করে রাখা যায়!”

বিতর্ক উঠতে পারে বুঝে রেজিস্ট্রার তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে যা জানানোর বলে দেওয়া হয়েছে।’’ উপাচার্য নিমাই সাহাও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Biometric Bardhaman university বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy