দলীয় নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছিলেন বছর তিনেক আগে। কিন্তু জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় এখনও সব বুথে কমিটিই গঠন করে উঠতে পারেনি বিজেপি।
গত বিধানসভা ভোটের পরেই প্রতি বুথে দশ জনের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এমনকি, প্রতি বুথে তিরিশ জন ভোটার পিছু এক জন কর্মী খোঁজার কথাও তিনি বলেছিলেন। কিন্তু বর্ধমান-দুর্গাপুর ও বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের তিরিশ শতাংশ বুথে বিজেপি তা করতে পারেনি বলে দলীয় সূত্রের খবর। দলের নেতাদের অবশ্য দাবি, আগের থেকে সংগঠন অনেকটা শক্ত করা হয়েছে এলাকায়। কিন্তু তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসের’ জেরে সমস্যা হয়েছে। তাঁদের আশা, লোকসভা ভোটের আগেই কমিটি গঠন হয়ে যাবে।
জেলা বিজেপি সূত্রের দাবি, তিন বছর আগে সভাপতির নির্দেশের সময়ে ওই দু’টি লোকসভা এলাকার ৩০ শতাংশ বুথেও কমিটি ছিল না। বুথগুলি পরিচালনার জন্য ‘শক্তিমিত্র প্রমুখ’ পদে নিয়োগও সম্ভব হয়নি। সেখানে এখন বর্ধমান পূর্ব লোকসভার ১৮৯৯টি বুথের মধ্যে ৭৬ শতাংশ বুথে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নেতাদের দাবি। বিজেপির একটি সূত্রে জানা যায়, ওই লোকসভার অন্তর্গত কাটোয়া বিধানসভার ২৯৭টি বুথের মধ্যে ২২৫টি, পূর্বস্থলী দক্ষিণের ২৬৪টির মধ্যে ২২৬টি, কালনার ২৬৫টির মধ্যে ২০৪টি, মেমারির ২৮৪টির মধ্যে ২৩৭টি, জামালপুরে ২৫৫টির মধ্যে ২০১টি, রায়নার ২৬৬টির মধ্যে ১৭৭টি বুথে কমিটি গড়া হয়েছে।
তুলনামূলক ‘শহর’ এলাকা নিয়ে গঠিত বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার ২০০৬টি বুথের মধ্যে বিজেপি ৭০ শতাংশ বুথে কমিটি তৈরি করতে পেরেছে। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, ওই লোকসভার মধ্যে পুরসভা এলাকা বর্ধমান ও দুর্গাপুরে বুথ কমিটি গঠনে অনেকটা পিছিয়ে আছে দল। বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা অঞ্চলে এখনও ১১৫টি বুথে কমিটি গঠন হয়নি। দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা এলাকায় শ’দেড়েক বুথে কমিটি হয়নি। বরং, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত মন্তেশ্বরে ২৭৯টির মধ্যে ২২৫টিতে কমিটি তৈরি হয়েছে। গলসিতে ২৯৪টির মধ্যে দু’শোরও বেশি বুথে কমিটি গড়া হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ, আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট বিধানসভা এই দু’টি লোকসভা কেন্দ্রের অধীন নয়। তবে সেখানেও বুথ কমিটি গড়ার ছবিটা আশানুরূপ নয় বলে বিজেপি সূত্রের খবর।
বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা সন্দীপ নন্দীর অভিযোগ, ‘‘সংখ্যালঘু জাতীয়তাবাদী মানুষেরা আমাদের দিকে আসছেন, তার প্রতিফলন আমরা পাচ্ছি। কিন্তু তৃণমূলের ধারাবাহিক সন্ত্রাসের পরিণামও বুঝতে পারছি।’’ দলের একটি সূত্রের দাবি, দশ জনকে নিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ থাকলেও অনেক জায়গায় ৫ জনকে নিয়ে কমিটি গড়া হয়েছে। দলের বর্ধমান পূর্ব লোকসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৃষ্ণ ঘোষের দাবি, “এটা একটা প্রক্রিয়া। তৃণমূলের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে সময়ের সঙ্গে কমিটি গঠন হচ্ছে।’’
জেলা পরিষদের ‘মেন্টর’ তথা প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “এই তথ্য ঠিক হলে বোঝাই যাচ্ছে বিজেপির দিকে মানুষের ঝোঁক নেই। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ভরসা করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy