বাঁ দিকে, কাটোয়ায় বিজেপি নেতা অরবিন্দ মেনন। ডান দিকে, তালবোনার সভায় সুনীল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে বিজেপি-তৃণমূলের অশান্তি বেধেছিল পূর্ব বর্ধমানের কালনার তালবোনা এলাকায়। দলীয় কর্মীর উপরে হামলার অভিযোগে তৃণমূল সভা করে ওই এলাকায়। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সুজাতা খাঁ আক্রমণ করেন সদ্য দলত্যাগী সাংসদ সুনীল মণ্ডলকে। বুধবার পাল্টা সভা করে তোপ দাগল বিজেপিও।
এ দিন সভায় ছিলেন বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের সাংসদ সুনীল মণ্ডল, শঙ্কর হালদার, বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য নেতা ধনঞ্জয় হালদারেরা। সুনীলবাবু সবচেয়ে বেশি সরব হন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দেবনাথ পরিবারের চার-পাঁচ জনের চাকরি হয়েছে। কিন্তু এক জনও নমশূদ্রের চাকরি হয়েছে? আমি নমশূদ্র। আমায় অপছন্দের কারণ, আমি তোলা তুলতে পারি না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ইনসান মল্লিককে খুন হতে হয়েছিল। অথচ, তৃণমূলের সভাপতি অভিযুক্তকে জামিন করিয়ে তাকে ব্যান্ড বাজিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছেন।’’ তৃণমূল ছাড়লে হামলা করানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সুনীলবাবু দল ছাড়ার পরেও সাংসদ পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসকদলের নেতারা। এ দিন সাংসদের জবাব, ‘‘আপনারা আমায় ভোট দিয়েছেন। ঠিক সময়ে সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করে ফের নির্বাচিত হয়ে আসব। তৃণমূলের লজ্জা করে না। তিন বছর ধরে কংগ্রেস থেকে বিধায়কদের এনে ঘরে পুষছে। তাঁরা তো কেউ পদত্যাগ করেননি।’’ সুনীলবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে স্বপনবাবু বলেন, ‘‘ক্রমাগতই উনি নানা কথা বলছেন। ওঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিকিট দিয়েছিলেন। আমরা কর্মীরা জিতিয়েছিলাম। আর আমি খারাপ না ভাল, তার সার্টিফিকেট সুনীল মণ্ডলের কাছ থেকে কেন নিতে হবে। এলাকার মানুষই এর জবাব দেবে।’’
এ দিন কালনার মহিষমর্দিনীতলাতেও বিজেপির রাজ্যের সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননের সঙ্গে সভায় ছিলেন সুনীলবাবু। কৃষি আইনের সুবিধা, আইনের ভাল দিক নিয়ে প্রচার কথা বলা হয়। তৃণমূলের ভুল-ত্রুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোরও নির্দেশ দেওয়া হয় কর্মীদের। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৯ জানুয়ারি কাটোয়ার সভা করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। সেখানে রেকর্ড পরিমাণ লোক আনতে চায়ছে বিজেপি। সাতটি বিধানসভা এলাকায় ছোট ছোট সভা করে, দলের মণ্ডল সভাপতি, কার্যকর্তাদের এক প্রকার ‘টার্গেট’ বেঁধে দেওয়া হচ্ছে লোক আনার। পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রে নসরৎপুর পঞ্চায়েতের হাটশিমলা রথতলা সমিতির ভবনেও স্থানীয় কার্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন মেনন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল থেকে প্রচুর লোক আসছেন। যেথানে যাচ্ছি, সেখানেই শুনছি বিজেপি আসছে। এই দলে একটা সময় পিসি-ভাইপো ছাড়া কেউ থাকবেন না।’’ কাটোয়ার সভায় দলে আর কেউ যোগ দেবেন কি না জানতে চাওয়া হয় সুনীলবাবুর কাছে। তাঁর জবাব, ‘‘তৃণমূল থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। আমার গাড়ির তিন বার ভাঙচুর করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারা পর্যন্ত অনেককেই আনতে চাইছি না আমরা। সময়মতো তাঁরা ঠিক যোগ দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy