গলসির ঘাগড়ায় বাড়িতে হামলার চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র
দুই গোষ্ঠীর গোলমাল, বোমাবাজিতে তেতে উঠল গলসি। আহত হলেন ছ’জন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমালেই অশান্তি বাধে শনিবার সকালে। গুলিও চলে বলে এলাকাবাসীর একাংশের দাবি।
জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের ধরা হবে। পুলিশ তদন্ত করছে। গুলি চালানোর কথা ঠিক নয়।’’ বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে গলসিতে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, বিধায়ক অলোক মাঝির কাছে জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধায়ক জানিয়েছিলেন, সব ঠিক আছে। তার দু’দিন পরেই এলাকায় গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, ‘‘দলনেত্রী বলেছেন, যারা অশান্তি করবে তারা দলের কেউ নয়। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসি ১ ব্লকের ঘাগড়া এলাকায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শেখ জাকির হোসেন ও ব্লক কার্যকারী সভাপতি ওমর ফারুকের গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ রয়েছে। কয়েক মাস ধরে দুই গোষ্ঠীর গোলমাল চলছে এই গ্রামে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফারুক গোষ্ঠীর সমর্থক শেখ আবু সালামকে মারধরের অভিযোগ ওঠে জাকির অনুগামীদের বিরুদ্ধে। তাঁকে উদ্ধার করে পরিজনেরা প্রথমে পুরসা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে বর্ধমানে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন। পুলিশেও অভিযোগ করেন সালামের ভাই শেখ ওসমান।
এর পরেই শনিবার সকালে বোমাবাজি হয় গ্রামে। অভিযোগ, সালামকে মারধরে জড়িতরাই এ দিন সালামের বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ি ঘিরে বোমাবাজির পাশাপাশি গুলিও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। বাড়ি, একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আহত হন সালামের দুই কাকা-সহ ছ’জন। সালামের পরিজনদের দাবি, সকালে সালামের চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই সময়েই বাড়িতে হামলা হয়। ৪০-৫০ টি বোমা পড়ে বাড়িতে, দাবি তাঁদের। পাশের নির্মীয়মাণ একটি বাড়িতে গিয়ে তাঁরা আশ্রয় নেন। আহত শেখ ওসমান, শেখ হুদাইদের কথায়, ‘‘পাশের বাড়িতে আশ্রয় না নিলে খুন হয়ে যেতাম।’’
তৃণমূলের ব্লক কার্যকারী সভাপতি ফারুকের অভিযোগ, ‘‘সভাপতির অনুগামীরা লুটেপুটে খাচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই মারধর করা হচ্ছে। শুক্রবার রাতে সালামকে বিনা কারণে মারধর করা হয়। এ দিন সকালে আবার বোমা নিয়ে হামলা করা হয়।’’
যদিও ব্লক সভাপতি জাকির দাবি করেন, ‘‘শুক্রবারের সন্ধ্যার ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। ওটা গ্রামীণ বিবাদ। কিন্তু এ দিন সকালে সে নিয়ে কিছু বামপন্থী লোকজন দলের নাম ভাঙিয়ে আমাদের পার্টি অফিসে হামলা চালায়। আমাদের কর্মীরা একজোট হয়ে প্রতিবাদ করেন। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।’’
এ দিন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সালামের বাড়ি ও আশপাশে বোমার চিহ্ন। বাড়ি দেওয়ালেও বোমার আঘাতের ছাপ। গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy