Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পরীক্ষায় সেতু, আটকে ভারী গাড়ি

রাতের অন্ধকারে টর্চ ও হাতে লাঠি নিয়ে ডিভাইডারে দাঁড়িয়ে পুলিশ। দশ বা বারো চাকার ভারী যান দেখলেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

স্তব্ধ: দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্রাক। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

স্তব্ধ: দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে ট্রাক। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪০
Share: Save:

রাতের অন্ধকারে টর্চ ও হাতে লাঠি নিয়ে ডিভাইডারে দাঁড়িয়ে পুলিশ। দশ বা বারো চাকার ভারী যান দেখলেই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকর্মীরা জানিয়ে দিচ্ছেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে, ভারী গাড়ি ছাড়া হবে না।

শুক্রবার গভীর রাত থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে বর্ধমানের তেলিপুকুর মোড় ও নবাবহাটে এই ছবি দেখা গিয়েছে। পালশিট টোলপ্লাজাতেও ভারী যান আটকে দিয়েছে পুলিশ। পুরো রাস্তা জুড়ে হাজারখানেক পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়েছে। ফলে, যানজটও হচ্ছে। দূরপাল্লার বাস আটকে পড়ায় যাত্রীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।

মাঝেরহাটে সেতু ভেঙে পড়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী ক্যাবিনেট বৈঠকের পরে ভারী যান চলাচলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এর পরেই পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব পূর্ত ও সেচ দফতরকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জেলার সব সেতুর ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ করে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন। শনিবার জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরে সেতুগুলি দিয়ে ভারী যান যাতায়াত করতে দেওয়া যাবে কি না, তা বলতে পারব।’’ অর্থাৎ, এই সমস্যা কাটতে এখনও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।

এ দিন সকালে চালকল মালিকদের সংগঠন ‘বেঙ্গল রাইস মিল’-এর কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক অভিযোগ করেন, মাঝরাস্তায় চাল বা ধানের গাড়ি পুলিশ আটকে দিচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা জেলায় অন্তত একশোটি চাল-ধানের গাড়ি আটকে দিয়েছে পুলিশ। ১৫ টনের বেশি কোনও গাড়িতেই পণ্য নেই। সে জন্য আমরা ওই সব গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছি। জেলাশাসক, সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিক ও মন্ত্রীর দফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’

ওই সংগঠনের কর্তাদের দাবি, এক সপ্তাহ ধরে রাস্তায় গাড়ি না চললে তাঁদের ব্যবসা মার খাবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চলতি বছরের চাল সরকারের ঘরে জমা দেওয়া যাবে না। তাঁরা জানান, রাস্তার উপরে দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বীরভূমের গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওই সমিতির সদস্য রাজকুমার সাহানার অভিযোগ, ‘‘খালি গাড়িও আটকে দেওয়া হচ্ছে। চালকল বন্ধ রাখার মতো পরিস্থিতি হবে। আগে থেকে বিষয়টি জানালে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।’’

ওই রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির চালক উদয়ন সিংহ, মণীশ খান্নারা বলেন, ‘‘রেশনের জিনিস, সরকারের চাল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি। কখন ছাড়া পাব বুঝতে পারছি না!’’ তাঁরা জানান, দামোদরের উপর কৃষক সেতু দিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। গলসি-কাটোয়ার দিকেও চলাচল নিষিদ্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘নিরাপত্তার কারণেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bridges Flyover Collapse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE