Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

চিকিৎসা নিয়ে ক্ষোভ মেটাতে সমন্বয় কমিটি

রোগীদের সঙ্গে কথা বলা, ‘সিসিইউ’-তে গিয়েও রোগীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২০ ০২:২৪
Share: Save:

কোথাও ঘণ্টার পরে ঘণ্টা বাড়িতেই করোনা-রোগী পড়ে থাকার অভিযোগ উঠছে। আবার ‘কোভিড’ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেও চিকিৎসা মিলছে না বলে দাবি করছেন অনেকে। ‘সারি’ ওয়ার্ডের চিকিৎসা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতর যৌথ ভাবে প্রতিটি জেলায় সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকদের নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে দিয়েছে। গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য ভবনে ওই দুই দফতরের অধিকর্তা ওই কমিটি কী-কী করবে, তার প্রাথমিক নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছেন প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের জন্য সাত সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন রানিগঞ্জের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সমরেন্দ্রকুমার বসু। কমিটিতে রয়েছেন বর্ধমানের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বি এন সরকার, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক উজ্জ্বল বিশ্বাস। রয়েছেন নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, সন্তোষ মণ্ডল, বিজিত চট্টোপাধ্যায়, নিলাদ্রী সেন ও গণেশ গাইনের মতো চিকিৎসকেরাও। মূলত এই কমিটিকে জেলার প্রতিটি কোভিড-হাসপাতাল, ‘সেফ হোম’ ও ‘স্যাটেলাইট সেন্টার’গুলি (আক্রান্তের বাড়িতে নিভৃতবাস, যেগুলি জিপিএস দ্বারা যুক্ত) পরিদর্শন করতে হবে। করোনা-আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসা-পরিষেবা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি, পুরো ওয়ার্ড ঘুরে দেখা, আশঙ্কাজনক অবস্থা রয়েছেন এমন রোগীদের সঙ্গে কথা বলা, ‘সিসিইউ’-তে গিয়েও রোগীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পূর্ব বর্ধমানে ১৫০ শয্যার একটি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানের দু’টি কোভিড হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৫০০। পূর্ব বর্ধমানে তিনটে ও পশ্চিম বর্ধমানে আটটি ‘সেফ হোম’ রয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই কমিটির পরিদর্শনের পরে, সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজ ও স্বাস্থ্য দফতরের সিনিয়র চিকিৎসক, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কী কী উন্নতির প্রয়োজন সে পরামর্শ দেবেন। প্রতিটি পরিদর্শনে অন্তত তিন জন করে চিকিৎসকের যাওয়া বাধ্যতামূলক। পরিদর্শনের পরে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ-সহ একটি রিপোর্ট তৈরি করে স্বাস্থ্য ভবনে ই-মেল করতে বলা হয়েছে। ওই কমিটির একাধিক সদস্যের দাবি, স্বাস্থ্য ভবনের প্রাথমিক নির্দেশের বাইরে গিয়েও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রাম বা শহরে যে সব ডাক্তার রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে করোনা-উপসর্গ নিয়ে কেউ এলাকায় রয়েছেন কি না জানা যাবে।

দুই বর্ধমানের সমন্বয় কমিটির প্রধান সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, “সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকদের নিয়ে এই কমিটি তৈরি হয়েছে। সরকারের নির্দেশমতো আমরা বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখে পরামর্শ দেব। আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়, যে সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা হচ্ছে, সেটাও প্রত্যন্ত এলাকার চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বন্ধ করা সম্ভব হবে।’’ ওই কমিটির সদস্য, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক উজ্জ্বল বিশ্বাসের দাবি, “করোনা-আক্রান্ত, হাসপাতাল, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে মূলত এই কমিটি যোগাযোগ রাখবে। যে কোনও সমস্যা তুলে ধরে কী ব্যবস্থা নিতে হবে তা স্বাস্থ্য দফতর ও সরকারকে তথ্য-সহকারে জানানোর কথা ভেবেছি।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE