Advertisement
E-Paper

নিমেষে ঘুরল বাস, রক্ষা দুই খুদের

বর্ধমানের গোলাপবাগ এলাকার বাসিন্দা তুষার শেখ বলেন, ‘‘প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। আল্লা বাঁচিয়ে দিয়েছেন ওদের। গ্রামের বাসিন্দারা আমাকে অনেক স্নেহ, ভালবাসা দিয়েছেন।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেয়েদুটোকে বাসের সামনে চলে আসতে দেখে চিৎকার শুরু করে দিয়েছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু দুর্বল হননি চালক। নিমেষে বাসের স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে চাকা ডান দিকে ঘুরিয়ে দেন তিনি। চাকায় পিষে যাওয়ার মুখ থেকে বেঁচে বাসের নীচে ঢুকে যায় দুই খুদে। তাদের উদ্ধার করে দেখা যায়, হাত-পা ছড়ে যাওয়া ছাড়া খুব একটা চোট লাগেনি দু’জনের কারও। সোমবার সকালে ওই ঘটনার পরে ওই বাসচালক তুষার শেখকে নামিয়ে মিষ্টি খাওয়ান ভাতারের বামশোর গ্রামের বাসিন্দারা।

বর্ধমানের গোলাপবাগ এলাকার বাসিন্দা তুষার শেখ বলেন, ‘‘প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। আল্লা বাঁচিয়ে দিয়েছেন ওদের। গ্রামের বাসিন্দারা আমাকে অনেক স্নেহ, ভালবাসা দিয়েছেন।’’

বামশোর গ্রামের পাশ দিয়েই গিয়েছে বাদশাহি রোড। এ দিন ওই রাস্তা পেরিয়ে বামশোর প্রাথমিক স্কুলে যাওয়ার সময় বিপদের মুখে পড়েন তৃতীয় শ্রেণির সোহানা পারভিন ও প্রথম শ্রেণির রূপসনা খাতুন। মাসতুতো বোন তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টা নাগাদ রাস্তা পেরোতে গিয়েই বাসের সামনে পড়ে যায় দুই খুদে। বর্ধমানগামী কুলি-বর্ধমান ভায়া নতুনহান রুটের বাসের চালক তুষার শেখ অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে বাস না ঘোরালে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারত। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে দেখেন, বাসের তলায় শুয়ে পড়েছে দুই খুদে। হাত-পা ছড়ে গিয়ে রক্ত পড়ছে দেখে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় দু’জনকেই।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহন শেখ, আজিজুল শেখ, মধু শেখরা বলেন, ‘‘আমরা তো ভেবেই নিয়েছিলাম বাসের চাকায় দু’জন পিষে গেল। চোখ বুজে চিৎকার করতেও শুরু করেছিলাম। কিন্তু বাস চালকের তৎপরতায় ওরা বেঁচে গেল।’’ তবে ব্যাপারটা যে খুব একটা সহজ ছিল না, তাও বলছেন তাঁরাই। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তার পাশেই পুকুর। বাসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল একটি টোটো। চালকের একটু ভুল হলে অন্য বিপদ ঘটে যেতে পারত। চালকের দাবি, “বাসস্টপ থেকে ছাড়ার পরে গতিবেগ খুব বেশি ছিল না। সে জন্য স্টিয়ারিং ডান দিকে ঘুরিয়ে সজোরে ব্রেক মারতেই বাসটি দাঁড়িয়ে যায়।’’

ওই বাসের পিছনেই ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান পরেশনাথ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “বাস চালক যে ভাবে পড়ুয়াদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন, তাতে কোনও ধন্যবাদই যথেষ্ট নয়। খবর পেয়ে পুলিশ বাসটিকে আটক করতে এসেছিল। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সঠিক ঘটনা জানিয়ে পুলিশকে ফিরিয়ে দেন।’’

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত ঘোষ বলেন, “তিন জন মিলে রাস্তা পার করে স্কুল আসছিল। তার মধ্যে এক জন ছুটে স্কুলে ঢুকে পড়লেও ওই দু’জন বাসের সামনে পড়ে যায়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রাস্তার ধারে স্কুল হওয়ায় আমরা খুবই আতঙ্কে থাকি। বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে ফিরল দুই ছাত্রী।’’

Accident Promptness Kids
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy