E-Paper

আইনি যুদ্ধের পথে হাঁটবেন চাকরিহারা-রা

সূত্রের খবর, জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকেই চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকেরা রয়েছেন। এই মামলায় ইন্টারভিউ-বিতর্কের বিষয়টি সামনে আসে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৩ ০৯:০৪
 আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাকরিহারাদের একাংশ ।

আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন চাকরিহারাদের একাংশ ।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশিক্ষণহীন (নিয়োগের সময়ে যাঁদের ডিএলএড ডিগ্রি ছিল না) ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। শনিবার ওইবাতিলের তালিকায় থাকা পশ্চিম বর্ধমানের চাকরিহারাদের একাংশও জানালেন, তাঁরা আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি, তাঁরা জানাচ্ছেন, এই রায়ের ফলে, সমাজে তাঁদের ‘অন্য নজরে’দেখা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকেই চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকেরা রয়েছেন। এই মামলায় ইন্টারভিউ-বিতর্কের বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগ ওঠে, নিয়ম অনুযায়ী ইন্টারভিউয়ে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নেওয়ার কথা থাকলেও, বহু ক্ষেত্রেই তা নেওয়া হয়নি। যদিও, কাঁকসা-সহ জেলার বেশ কয়েক জন চাকরিহারা শিক্ষকের সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবি, তাঁদের অ্যাপ্টটিউড টেস্ট ও ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল।

এক চাকরিহারা শিক্ষকের বক্তব্য, “আমরা নিজের যোগ্যতাতেই চাকরি পেয়েছি। কোথাও টাকা দিইনি। কিন্তু আশপাশের অনেকে ভাবছেন, আমরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছি। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা দ্রুত আইনি লড়াইয়ে নামব। বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে।” এ দিকে, দুর্গাপুরের এক চাকরিহারা শিক্ষকের দাবি, তাঁদের একাংশ শনিবার পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের সঙ্গে দেখা করেছেন। সভাপতি তাঁদের জানিয়েছেন, হতাশ হওয়ার মতো কিছু নেই। কারণ পর্ষদ হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে এবং প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথাও ভাবছে। অন্য এক চাকরিহারা শিক্ষকের আবার দাবি, সরকারের বিজ্ঞাপন দেখেই পরীক্ষা, অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তাঁর সংযোজন: “প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত নিয়ে যে বিরোধ দেখা দিয়েছে, সে জন্য আমরা দায়ী নই। কারণ সরকারের বিজ্ঞাপনে কোথাও প্রশিক্ষিত না হলে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না, এটা লেখা ছিল না।”

এ দিকে, জেলার কত জনের চাকরি গিয়েছে, তা নিয়ে শনিবার রাত পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে কোনও তথ্য মেলেনি। জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) দেবব্রত পাল বলেন, “এখনও সরকারি ভাবে কোনও তালিকা পাইনি। পেলে যা নির্দেশ আসবে, তা অনুযায়ী পদক্ষেপকরা হবে।”

যদিও, তৃণমূল কংগ্রেস প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক অশোক রুদ্রের দাবি, তাঁদের কাছে থাকা তালিকা অনুযায়ী জেলার ১১৫৯ জন চাকরি হারিয়েছেন। তাঁরা সাংগঠনিক ভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন বলে জানিয়েছেন অশোক। পাশাপাশি, বাম প্রভাবিত নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক মধুমিতা রায়ের বক্তব্য, “অযোগ্যদের সঙ্গে কত জন যোগ্য চাকরি হারিয়েছেন, তা দেখে আমরা সাংগঠনিক ভাবে যোগ্যদের পাশে থাকব। সে প্রস্তুতি চলছে।”

পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভাবার কিছু নেই বলেই মনে করছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রতনু সাহা। তাঁর কথায়, “যাঁরা জানেন যে তাঁরা ঠিক ভাবে চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা মাথা উঁচু করেই থাকবেন। সমাজে কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। নিজেরা ঠিক হলে, সব ঠিক হবে। এই অবস্থায় হতাশায় ভোগারও কিছু নেই। সৎ পথে চাকরি পেয়ে থাকলে ফের নিজের কাজ ফিরে পাবেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kanksa SSC recruitment scam Raniganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy