Advertisement
E-Paper

সাফাইয়ের মাঝে খাটালই কাঁটা

দেশের ৭৩টি শহরে চালানো সমীক্ষায় পরিচ্ছনতায় এই শহর স্থান পেয়েছিল ৭২ নম্বরে। পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরেই তাই শহরকে পরিচ্ছন্ন করার ডাক দিয়েছিল তৃণমূলের পুরবোর্ড। আসানসোলকে ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১২
আসানসোল পুর-এলাকায় রয়েছে এমন বহু খাটাল। নিজস্ব চিত্র।

আসানসোল পুর-এলাকায় রয়েছে এমন বহু খাটাল। নিজস্ব চিত্র।

দেশের ৭৩টি শহরে চালানো সমীক্ষায় পরিচ্ছনতায় এই শহর স্থান পেয়েছিল ৭২ নম্বরে। পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরেই তাই শহরকে পরিচ্ছন্ন করার ডাক দিয়েছিল তৃণমূলের পুরবোর্ড। আসানসোলকে ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও শহরের যেখানে-সেখানে গজিয়ে ওঠা খাটাল নিয়ে ব্যতিব্যস্ত শহরবাসী। মেয়রের কাছে এ ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।

আসানসোলে জোরকদমে সাফাই অভিযানে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। মাঠে নেমেছে একাধিক সংগঠনও। কিন্তু ঘন জনবসতির এই শহরে মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে খাটালগুলি। এর ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। বিশেষত বর্ষায় খাটালের চার পাশে মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে, দূষণ ছডায়। দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা দায় হয়। আসানসোল শহরের রেলপাড়, আপকার গার্ডেন, এসবি গড়াই রোড, ইসমাইল, বার্নপুরের নিউটাউন, ইস্কো আবাসন এলাকা, কুলটি, বরাকর, নিয়ামতপুর-সহ শিল্পাঞ্চলের বহু এলাকা জুড়ে কয়েকশো খাটাল রয়েছে।

আসানসোলের চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত জানান, যে এলাকায় খাটাল থাকে সেখানে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া খাটালের চার পাশে ঠিক মতো সাফাই না হওয়ায় বিষাক্ত পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ে। শহরের যে সব এলাকায় রমরমিয়ে খাটাল চলছে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেই বোঝা যায়, কতটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আসানসোল আপকার গার্ডেনের বাসিন্দা মলয় সরকার জানান, শুধু খাটালের হাত থেকে মুক্তি পেতেই তাঁকে বাসস্থান পাল্টাতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মশামাছির উপদ্রব তো ছিলই। সঙ্গে ছিল প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। বাড়িতে অতিথি এলে লজ্জা পেতাম।’’ বার্নপুরের নিউটাউন এলাকার বাসিন্দা প্রণবেশ শীল বলেন, ‘‘খাটাল ব্যবসায়ীরা পরিবেশ দূষণের তোয়াক্কা না করেই যেখানে-সেখানে গোবর ডাঁই করে রাখেন। গন্ধে এলাকায় টেকা যায় না।’’ তাঁর আরও দাবি, খেলার মাঠগুলিতে ঘুঁটে শুকোতে দেওয়া হয়। ফলে, বাচ্চারা খেলার জায়গা পায় না। কুলটির রানিতলা এলাকায় জিটি রোডের ধার ঘেঁষে রমরমিয়ে চলছে খাটাল ব্যবসা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত গণ বলেন, খাটালের আবর্জনা ও কর্দমাক্ত জল রাস্তাতেই ফেলা হয়। ফলে, গোটা অঞ্চলটি নরকের চেহারা নেয়। নিষেধ করলেও কথা কানে তোলেন না খাটাল ব্যবসায়ীরা।’’ বাসিন্দাদের ক্ষোভ, বর্ষায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে।

খাটালের গরু-মোষগুলি শহরের মধ্যে মূল রাস্তা ধরেই চলাফেরা করে। ফলে, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। নাগরিকেরা মনে করেন, খাটাল ব্যবসায়ীরা বাসিন্দাদের দুধের জোগান দেন ঠিকই, কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র খাটাল গজিয়ে ওঠায় আবর্জনা বাড়ছে, পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তাই শহরের বাইরে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে খাটাল তৈরি করে দেওয়া হলে সব দিকই বজায় রাখা সম্ভব বলে তাঁদের দাবি। মেয়র জিতেন্দ্রবাবু জানান, শহরে সৌন্দর্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব প্রস্তাবই বিবেচনার মধ্যে রয়েছে।

Asansol Cleanage Cattle shed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy