আদালত থেকে বেরিয়ে আসছেন ধৃত সন্দীপ সাধু। নিজস্ব চিত্র।
রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলের শিক্ষানবিশ পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ইসিএলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা হল বুধবার। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এই সাজা ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত সন্দীপ সাধুকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছ’মাসের সাজা শোনানো হয়েছে। এই মামলায় আরও দুই অভিযুক্তকে খালাস করা হয়েছে। যিনি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন সেই অজয় দাস পারিকা গত বছরই মারা গিয়েছেন।
সিবিআই সূত্রে খবর, আসানসোল উত্তর থানার অন্তর্গত কাখঁয়া গ্রামের বাসিন্দা, ইসিএল সাঁকতোড়িয়ার ‘ডেসপ্যাচ’ বিভাগের গ্রুপ-৩ কর্মী সন্দীপ-সহ তিন জনের নামে অভিযোগ ছিল। শুনানির শেষে কেবলমাত্র সন্দীপকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। সিবিআই আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী রাকেশ কুমার জানান, ২০১৮ সালের মে মাসে ঘুষ নেওয়ার সময়ে অভিযুক্তকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে সিবিআই। আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বছর রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলের শিক্ষানবিশ পদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এই পদে আবেদন জমা দেন অজয়। অভিযোগ, সেই সময়ে ইসিএলের সদর কার্যালয়ে কর্মরত ‘ডেসপ্যাচ’ বিভাগের ডিলিং ক্লার্ক সন্দীপ শিক্ষানবিশ পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেন অজয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেই সময় অজয়ের কাছে তিনি এক লক্ষ টাকা ঘুষ চান বলে অভিযোগ। কিন্তু দর কষাকষির পরে ৯০ হাজার টাকায় রফা হয়। ২০১৮ সালের ৩ মে অজয় কাগজে মুড়ে ৫০ হাজার টাকা সন্দীপকে দেন। তখনই তাঁকে সিবিআই আধিকারিকেরা পাকড়াও করেন। সন্দীপের বিরুদ্ধে দু’টি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তে ইসিএল সদর দফতরের এইচআরডি সুভাষচন্দ্র গুপ্ত ও তাঁর আপ্তসহায়ক মানস ভুঁইয়ার নামও উঠে আসে। কিন্তু শেষমেশ তাঁরা এই মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যান।
আইনজীবীদের সূত্রে দাবি, সন্দীপ তাঁর কাছে ঘুষ চাওয়ার পরেই অজয় সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সিবিআইয়ের পরিকল্পনা মতো ফাঁদ পাতা হয়। সন্দীপ সেই ফাঁদে পা দেন। এই মামলায় মোট ১৩ জন সাক্ষ্য দেন। প্রায় ছ’বছরের মাথায় এই মামলার নিষ্পত্তি হল।
রায় ঘোষণার সময় সন্দীপ আদালতকে জানান, তাঁর পায়ে সমস্যা রয়েছে। ঠিক মতো চলতে পারেন না এবং পিঠেও ব্যথা আছে। তাই তাঁর সাজা কম করা হোক। বিচারক চক্রবর্তী তাঁকে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা দু’টি মামলায় সর্বোচ্চ ১৭ বছরের সাজা রয়েছে। শেষে বিচারক সন্দীপের বিরুদ্ধে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার ঘোষণা করেন। অনাদায়ে আরও ছয় মাস জেল। সাজার কথা শোনার পর সন্দীপ জানান, তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy