কারও ভাগ্যে জুটল নতুন দফতর, কেউ হারালেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই বর্ধমান পুরসভার নানা দফতরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। দলের শীর্ষ নেতা থেকে প্রশাসনিক কর্তা, একের পর এক বৈঠক করেও তা থামাতে পারছিলেন না। শেষমেশ, পুরপিতা পারিষদদের (চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল) দায়িত্বে বেশ কিছু রদবদল করা হল। যেমন, পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের হাতে নতুন করে গেল পূর্ত দফতর। আবার বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের দায়িত্ব থেকে লাইসেন্স ও মিউনিসিপ্যাল স্টোরের দায়িত্ব পেলেন সেলিম খান।
বর্ধমান পুরসভার ৩৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে দু’জন নির্দল। বাকি ৩৩ জনের মধ্যে বরাবরই দুটি ভাগ ছিল। একটি গোষ্ঠী পুরপ্রধান অনুগামী, অন্যটি বিরোধী। বিধানসভা ভোটের আগে থেকে পুরপ্রধান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পরপর অভিযোগ তোলে বিরোধী পক্ষ। তৃণমূল সূত্রের খবর, কখনও আবর্জনা ফেলার জায়গা সই নকল করে বিক্রির চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কখনও শহরের নানা জায়গায় জলাশয় বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। প্রশাসন ও দলীয় স্তরে বারবার বৈঠক হয়। দলীয় সূত্রের খবর, যে ঘরে বাড়ির নকশা ও অনুমোদন দফতরের নথিপত্র থাকে সেখানে পুরপ্রধান তালা ঝুলিয়ে দেন। শেষমেশ, কয়েকদিন আগে কলকাতায় দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস, জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ, পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত, বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানে নেওয়া সিদ্ধান্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিলমোহর দেন। সোমবার সেই নির্দেশ স্বপন দেবনাথের হাতে পৌঁছয়। জানা গিয়েছে, সেদিনই সন্ধেয় পুরপ্রধান তা হাতে পান। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’একদিনের মধ্যেই রদবদলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে।
তবে পুরপ্রধান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও কার্যত তেমন কিছু দায়িত্ব কমেনি বলে অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরাই। বরং বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁদের দাবি। তার সঙ্গে পুরপিতা পারিষদ অরূপ দাস ও সেলিম খানের ডানা ছাঁটা হয়েছে বলেও অভিযোগ। আবার ভারসাম্য রাখতে গিয়ে খোকন দাসের হাত থেকে পূর্ত দফতর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরপ্রধানের হাতে। জানা গিয়েছে, স্বরূপ দত্ত নতুন করে পূর্ত দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন, উপপুরপ্রধানের হাতে গিয়েছে বাড়ির নকশা ও অনুমোদন, খোকন দাস পেয়েছেন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগ, সেলিম খানের হাতে রয়েছে উন্নয়ন ও পরিকল্পনা, লাইসেন্স ও মিউনিসিপ্যাল স্টোর, অরূপ দাস পেয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিভাগ, সুমন মিস্ত্রি পেয়েছেন মিউটেশন ও সেপারেশন। একমাত্র শিখা দত্ত সেনগুপ্তের হাতে যে কর বিভাগের দায়িত্ব ছিল তাই রয়েছে।
দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশে রদবদল করা হয়েছে। যা বলার পুরপ্রধান বলবেন।’’ আর পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘যা বলার নেতারা বলবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy