আমানতকারীদের অর্থ আত্মসাতে জামালপুর ডাকঘরের অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার বিদ্যুৎ শূরকে হেফাজতে নিল সিআইডি। রবিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহি থানার বুলচন্দ্রপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি। হাতিয়ে নেওয়া টাকা এবং জাল নথিপত্র উদ্ধার করতে ও ঘটনায় জড়িত বাকিদের বিষয়ে বিশদে জানতে ধৃতকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। ধৃতের সাত দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন সিজেএম বিনোদ মাহাত।
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার বিষয়ে ২০২৩ সালে সিজেএম আদালতে মামলা করেন জামালপুরের বাসিন্দা সুরজিৎ পাল। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্তের জন্য জামালপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেয় আদালত। পরে তদন্তভার সিআইডি-র হাতে যায়। অভিযোগে সুরজিৎ জানান, তিনি অতি কষ্টে ২ লক্ষ টাকা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডাকঘরে জমা করেন। পরে তাঁর পরিবারের অন্যান্যরা ডাকঘরে কয়েক দফায় আরও টাকা জমা করেন। সব মিলিয়ে তাঁরা ১২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ডাকঘরে জমা দেন। ডাকঘর থেকে তাঁদের পাশবই ও অন্যান্য নথিপত্র দেওয়া হয়। পরে পরিবারের এক সদস্যের চিকিৎসার প্রয়োজনে তাঁরা ডাকঘর থেকে টাকা তুলতে যান। নানা অছিলায় তাঁদের টাকা তুলতে দেওয়া হয়নি। পরে তাঁরা জানতে পারেন, ডাকঘরে আদৌ টাকা জমা পড়েনি। টাকা জমা দেওয়ার বিষয়ে তাঁদের যে নথিপত্র দেওয়া হয়, তা-ও জাল। এর পরেই তাঁরা ডাক বিভাগের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানান। তাতে কাজ না হওয়ায় সুরজিৎ মামলা করেন।
আদালতের নির্দেশে জামালপুর থানা জাল নথিপত্র তৈরি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। কিন্তু অভিযুক্তদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। পরে তদন্তভার নিয়ে সিআইডি কিছুদিন আগে ডাকঘরের এক এজেন্টকে গ্রেফতার করে। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে তাঁর কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পায় সিআইডি। গ্রেফতার এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার। সেই আবেদন খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। এ পর্যন্ত ৩৭টি নকল পাশবই বাজেয়াপ্ত করেছে সিআইডি। সেগুলিতে ডাকঘরে নকল স্ট্যাম্প দেওয়া রয়েছে বলে সিআইডির দাবি।