জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়াকে কেন্দ্র করে এক প্রবীণ ও নাবালকের মধ্যে অশাম্তির সূত্রপাত। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রৌঢ়কে মারধর, নাবালককে ‘শাসন’-এর মতো নানা অভিযোগ উঠেছে আউশগ্রামের উক্তা পঞ্চায়েত এলাকার সোঁয়ারা গ্রামে। রবিবারের ঘটনা। নিবারণ মেটে নামে ওই প্রবীণকে মারধরের অভিযোগে নাবালকের বাবা-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় রাজনীতিরও রং লেগেছে। প্রবীণের ছেলের অভিযোগ, তাঁরা তৃণমূল সমর্থক হওয়ায় বিজেপি ঘনিষ্ঠ নাবালকের পরিবার এই মারধর করেছে। বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বছর ষাটেকের নিবারণবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, গ্রামেরই ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া ওই নাবালক তাঁকে দেখলেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিত। তা নিয়ে দিন পনেরো আগে পড়ুয়ার মায়ের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। অভিযোগ, এর পরে রবিবার মায়ের কাছে কেন নালিশ করা, তা জানতে চেয়ে নিবারণবাবুকে গালিগালাজ করে ওই নাবালক। নিবারণবাবু জানান, তিনি এর প্রতিবাদ করে ‘শাসন’ করেন ওই নাবালককে। শাসন বলতে ‘বকাঝকা’, দাবি ওই প্রবীণের। যদিও নাবালকের পরিবারের অভিযোগ, ওই নাবালককে মারধর করেছেন নিবারণবাবু। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই প্রবীণ।
নিবারণবাবুর ছেলে নাড়ুগোপালবাবুর অভিযোগ, রবিবার ওই ঘটনার পরেই তাঁদের বাড়িতে চড়াও হন নাবালকটির বাবা শিশু মেটে ও তাঁর কয়েক জন পড়শি। নিবারণবাবুকে মারধর করে, টানতে টানতে গ্রামের মাঝখানে নিয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চাওয়ানো হয় বলে অভিযোগ। প্রবীণের ছেলের দাবি, ‘‘আমরা তৃণমূল করি। ওই পরিবারটি বিজেপি করে। তাই মারধর করা হয়েছে। মারধরে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। গুসকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাবার চিকিৎসা করানো হয়।’’
রবিবারই গুসকরা ফাঁড়িতে শিশুবাবু-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নিবারণবাবু। রাতেই প্রবীণকে মারধরের অভিযোগে দুর্যোধন মেটে, শিশুবাবু ও কার্তিক মাজি নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এলাকায় ওই তিন জনেই বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত। অভিযুক্তদের দাবি, মারধর করা হয়নি।
আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে থেকেই বিজেপির লোকজন অশান্তি তৈরি করছে। এই ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়।’’ যদিও বিজেপি নেতা সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এক কিশোরকে মারধর করেন ওই তৃণমূল কর্মী। গ্রামের মানুষ সম্মিলিত ভাবে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু তার পরে বিজেপি কর্মীদের নামে ওই তৃণমূল কর্মী মিথ্যা অভিযোগ করেন।’’
পুলিশ জানায়, ধৃত তিন জনকেই সোমবার বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy