দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
ম্যাটাডর ভাড়া করে আউশগ্রামের রাজচন্দ্রপুরে একটি পেপারমিলে মঙ্গলবার সকালে নির্মাণকাজে গিয়েছিলেন বুদবুদের পাথুড়িয়া, হাড়িফেলা গ্রামের প্রায় ২০ জন বাসিন্দা। রাতে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক ধরে বাড়ি ফেরার পথে কাঁকসার পিয়ারিগঞ্জের কাছে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল ম্যাটাডরের চালক-সহ তিন জনের।
পুলিশ জানায়, ফেরার পথে রাত ৯টা নাগাদ ম্যাটাডরটি বেলডাঙা হয়ে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কে ওঠে। প্রায় এক কিলোমিটার যাওয়ার পরে দ্রুত গতিতে আসা পানাগড়গামী একটি ট্রাক আচমকা ধাক্কা মারে ম্যাটাডরটিকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রচণ্ড শব্দ শুনে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশও এসে পৌঁছয়। ম্যাটাডরের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল। কোনও রকমে চালক ও সামনে বসে থাকা দু’জন যাত্রীকে বের করে আনা হয়। বাকী আহতদেরও উদ্ধার করা হয়। সবাইকে তড়িঘড়ি কাঁকসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক লখিরাম মুর্মু (৪০) ও বালক মুর্মুকে (৩৫) মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই ম্যাটাডরের চালক সঞ্জীব ঘোষকে (৩২) আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বুধবার সকালে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর।
মৃত লখিরামবাবু ও বালকবাবু পাথুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। সঞ্জীববাবুর বাড়ি বুদবুদের লবনধার গ্রামে। আহতদের মধ্যে সাত জন দুর্গাপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে তিন জন মহিলা। আহত রানি কিস্কু, শ্রীমতি বাগদিরা জানান, ট্রাকটি ধাক্কা মারার পরেই তাঁরা সবাই রাস্তায় ছিটকে পড়েন। তার পরে আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরলে দেখেন, হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনার খবর পৌঁছতেই পাথুড়িয়া গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। গ্রামের বাসিন্দা সোম মুর্মু, মনসা হাঁসদারা জানান, সকালে গ্রামের সবাই মিলে কাজে গেল। তার পরে রাতে দু’জনের মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছল।
তবে এ দিনের দুর্ঘটনার পরে ফের পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পিয়ারিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পুলিশের তাড়া খেয়ে দ্রুত গতিতে পালাতে গিয়ে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ম্যাটাডরে ধাক্কা মারে। মাসখানেক আগে এক়টি মারুতি ভ্যানের ধাক্কায় রঘুনাথপুরে মৃত্যু হয়েছিল এক সাইকেলআরোহীর। সেই সময়ও বাসিন্দারা পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগ তুলে প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধও করেন। তবে পুলিশ ট্রাকটিকে তাড়া করার অভিযোগ মানতে চায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়েই দ্রুত আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ট্রাকটিকেও আটক করা হয়েছে। চালক পলাতক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy