Advertisement
E-Paper

রুট থাকলেও বাস চলে না, ভরসা ট্রেকার

আসানসোল শহর থেকে দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার। অথচ, যোগাযোগ ব্যবস্থা সেই মান্ধাতার আমলের। এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই বারাবনির বাসিন্দাদের। পঞ্চায়েত এলাকা হলেও বেশ কিছু খনি ও কয়লা সহায়ক নানা শিল্প গড়ে ওঠায় প্রচুর লোকজনের আনাগোনা রয়েছে এই এলাকায়।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৫ ০১:৩২
বারাবনিতে এমন ছবিই দেখা যায় রাস্তাঘাটে।—শৈলেন সরকার।

বারাবনিতে এমন ছবিই দেখা যায় রাস্তাঘাটে।—শৈলেন সরকার।

আসানসোল শহর থেকে দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার। অথচ, যোগাযোগ ব্যবস্থা সেই মান্ধাতার আমলের। এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই বারাবনির বাসিন্দাদের।

পঞ্চায়েত এলাকা হলেও বেশ কিছু খনি ও কয়লা সহায়ক নানা শিল্প গড়ে ওঠায় প্রচুর লোকজনের আনাগোনা রয়েছে এই এলাকায়। অন্য নানা সুযোগ-সুবিধা থাকলেও নেই যোগাযোগের উপযুক্ত ব্যবস্থা। পরিবহণ দফতরের তরফে বেশ কয়েকটি বাস রুট তৈরি করা হয়েছিল। বহু বছর আগে বাস চলত বলেও বাসিন্দারা জানান। কিন্তু আচমকা তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন, তা জানা নেই এলাকাবাসীর। তাঁরা জানান, প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও সুরাহা হয়নি।

বাস না চলার সুযোগে ওই সব রুটে চালু হয়ে গিয়েছে ট্রেকার, অটো। তবে তাতে চড়াও রীতিমতো দুর্ভোগের বলে মনে করেন বাসিন্দারা। কারণ, ইচ্ছে মতো যাত্রী তোলে এই সব ট্রেকার। ফলে, দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকেই যায়। দোমহানি থেকে পুঁচরা, ইটাপাড়া, পলাশবন, আমডিহামোর এই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে প্রচুর ট্রেকার চলে। কিন্তু, সারা দিনে যাত্রিবাহী বাসের দেখা মেলে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পরে আসানসোল থেকে বারাবনি ফেরার কোনও বাস নেই। এলাকার অন্যতম জনবহুল জায়গা গৌরান্ডি, পানুরিয়া, কাপিষ্ঠা, মদনপুর, খোশনগর বা জামগ্রামে কোনও যাত্রিবাহি বাস চলেই না। খনিকর্মী বনোয়ারি রাজোয়ার বলেন, ‘‘গোটা দিন অপেক্ষা করেও বাসের দেখা পাবেন না।’’

ট্রেকারগুলিতে লোকজন কার্যত ঝুলে যাতায়াত করেন। অন্তত জনা ত্রিশ যাত্রী নিয়ে যেতে দেখা গেল একটি ট্রেকারকে। সকালে কেলেজোড়ায় স্কুলে যাওয়া বা বিকেলে ফেরা, পড়ুয়াদেরও এই ভাবেই যাতায়াত করতে হয়। নবম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, ফেরার সময়ে মাঝে-মধ্যে ট্রেকার পাওয়া যায় না। তখন প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে বাড়ি আসতে হয়। রেহাই পান না কেলেজোড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়া রোগীরাও। তাঁদেরও হয় ট্রেকারে চেপে বাদুড় ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথবা, অনেক বেশি টাকা গুনে গাড়ি ভাড়া করতে হয়l

কেলেজোড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে দেখা যায়, বাইরের রাস্তায় বেশ কিছু ভাড়ার গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। দোমহানি থেকে গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা সঞ্জয় বাদ্যকর যেমন জানালেন, মাসে এক বার করে স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসতে হচ্ছে তাঁকে। সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার জন্য প্রতি বার দেড়শো টাকা করে ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

যে ক’টি বাস বারাবনি এলাকায় যাতায়াত করে, সব ক’টিই মিনিবাস। সে নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, মিনিবাসের ভাড়া বেশি। ন্যূনতম দশ টাকা ভাড়া দিয়ে মিনিবাসে চড়ার সামর্থ্য এলাকার অনেকেরই নেই। বড় বাস চালানো হলে খানিকটা সুরাহা হবে বলে মনে করেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দা নিত্যানন্দ গোপের বক্তব্য, ‘‘বাইরে থেকে কেউ এসে এলাকায় ঘুরে দেখলেই বুঝতে পারবেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের।’’ তাঁর মতো এলাকার অনেকেরই ক্ষোভ, ‘‘আমরা জীবন হাতে নিয়ে চলাফেরা করি। অথচ, প্রশাসন নির্বিকার হয়ে বসে রয়েছে। কেন বাস চলছে না, সেই সমস্যা সমাধানের কোনও চেষ্টাই নেই।’’

Asansol Communication road bus susanta banik
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy