একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে রানিগঞ্জের বড়দহি পুকুর সাফাই করা হল রবিবার। এর পরেই পুকুর সাফাইয়ে পুরসভার ভূমিকা এবং জলাশয় ভরাটের অভিযোগ ঘিরে তৈরি হয়েছে চাপান-উতোর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জলাশয় ব্যবহার করেন স্থানীয় বিকাশনগর, মুচিপাড়া, কোড়াপাড়া-সহ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। বিভিন্ন পুজোয় বিসর্জনও এখানেই হয়। এ দিন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ৮০ জন সদস্য জলাশয় থেকে বর্জ্য ট্রলিতে তুলে নিয়ে যায়। ছ’টি প্রতিমার কাঠামো উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, পুরসভা যে উদাসীন, তা প্রতিমার কাঠামো উদ্ধারেই প্রমাণ।
এ নিয়ে তিন বছর ওই সংগঠনের সদস্যেরা বছরে এক বার করে জলাশয় সাফাই করলেন। বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, এই পুকুর অনেক বড় ছিল। বেশ কিছুটা অংশ জমি মাফিয়ারা ভরাট করে ফেলেছে। প্রতি বছর সাফাইয়ের কাজ করলে আবর্জনা ফেলে পুকুর ভরাটের চেষ্টা সফল হবে না বলে দাবি তাঁদের। এ দিন সাফাইয়ে শামিল হন স্থানীয় বাসিন্দা তথা সংগঠনের সদস্য তারা রুইদাস, গোবিন্দ বাউরি, কানাই ভগতেরা। তাঁরা জানান, এই কাজ করতে পেরে তাঁরা খুশি।
সংগঠনের অন্যতম সদস্য দিলীপকুমার সিংহ জানান, এ দিন পুরসভার ২ নম্বর বরো চেয়ারম্যান মোজাম্মেল শাহাজাদা পুরসভা থেকে একটি ট্রলি ও এক প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা নিজেরাও একটি ট্রলি নিয়ে এসেছিলেন। সাতটি ট্রলি ভর্তি আবর্জনা নির্দিষ্ট ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলা হয়েছে। প্রতি বছর তাঁরা ‘স্বচ্ছ জল সচ্ছল মন’ কর্মসূচি হিসেবে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই পুকুরটি সাফাইয়ের পরিকল্পনা নিয়েছেন।
বরো চেয়ারম্যান মোজাম্মেল শাহাজাদা দাবি করেন, ওই পুকুরের একাংশ ভরাট বাম জমানায় হয়েছে। পুকুর ভরাটের বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা চলছে। তিনি আরও জানান, প্রতি বছর ছটপুজোর সময়ে পুরসভা পুকুরের ঘাট পরিষ্কার করে। তার পরে কালীপুজো, সরস্বতী পুজোর বিসর্জন হয়েছে। যাতে আয়োজকেরা কাঠামো তুলে নেয়, সে দিকে পুরসভা নজর রাখবে বলে তাঁর আশ্বাস। রানিগঞ্জের প্রাক্তন পুরপ্রধান রুনু দত্তের পাল্টা দাবি, তৃণমূলেরই এক নেতা সম্প্রতি পুকুর ভরাট করে নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। বাম জমানায় পুকুর ভরাটের অভিযোগ যে মিথ্যা, তা এতেই প্রমাণ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)