Advertisement
E-Paper

টাকা চেয়ে দুর্ব্যবহারের নালিশ, সাসপেন্ড আয়া

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ জুন পুরুষ জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয় বর্ধমান ১ ব্লকের সিজেপাড়ার বাসিন্দা শেখ আনোয়ারকে। গাছ থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙেছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৪:৫৯
ঘটনার পরে পড়ে সেই ‘ট্র্যাকশন’। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার পরে পড়ে সেই ‘ট্র্যাকশন’। নিজস্ব চিত্র

রোগীর ভাঙা পায়ে ‘ট্র্যাকশন’ লাগিয়ে দেওয়ার জন্য টাকা চেয়েছিলেন আয়া। অভিযোগ, তা না দেওয়ায় ‘ট্র্যাকশন’ খুলে নেন তিনি। পরে রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই আয়াকে সাসপেন্ড করেছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ জুন পুরুষ জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয় বর্ধমান ১ ব্লকের সিজেপাড়ার বাসিন্দা শেখ আনোয়ারকে। গাছ থেকে পড়ে গিয়ে পা ভেঙেছিলেন তিনি। ওই দিনই অস্ত্রোপচার করে ‘সিবিএস পুরুষ ওয়ার্ডে’ রাখা হয় তাঁকে। ওই রোগীর পরিজনেদের দাবি, অস্ত্রোপচারের পরে বাঁ পা ‘ট্র্যাকশন’ দিয়ে ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়। রোগীর ভাই শেখ রাজু বাইরে থেকে ‘ট্র্যাকশন’ কিনেও আনেন। অভিযোগ, ওয়ার্ডের আয়া মানা মহান্ত ‘ট্র্যাকশন’ লাগিয়ে দেওয়ার জন্য দু’শো টাকা দাবি করেন। ওই পরিবারের দাবি, তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। বারবার অনুরোধ, কিছুটা তর্কাতর্কির পরে একশো টাকা দিতে রাজি হন তাঁরা। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ওই আয়া রোগীর পা থেকে ‘ট্র্যাকশন’ খুলে নেন বলে তাঁদের অভিযোগ।

শেখ রাজুর দাবি, ‘‘যন্ত্রণায় ছটফট করছিল দাদা। সঙ্গে চিৎকার। তাতেও মন গলেনি ওই আয়ার। টেনেহিঁচড়ে ট্র্যাকশন খুলে দেন তিনি।’’ শেষমেশ তাঁরা নিজেরাই রোগীর পায়ে ‘ট্র্যাকশন’ বেঁধে দেন, দাবি তাঁদের। পরের দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তাঁরা। ২৬ জুন শেখ আনোয়ারকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার শেখ রাজু জানান, তাঁর দাদা দিনমজুরি করেন এবং তাঁর একটি ছোট সাইকেল মেরামতির দোকান আছে। আর্থিক সঙ্গতি না থাকাতেই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে এ রকম হলে আমরা কোথায় যাব?’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ হওয়ার পরে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। রোগীর পরিজনেরা তাদের কাছে একটি ভিডিয়োও (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) জমা করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে কী ভাবে ওই রোগীর পা থেকে ‘ট্র্যাকশন’ খুলে দিচ্ছেন ওই আয়া। সঙ্গে শুধু রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং গালিগালাজ করেন বলেও অভিযোগ।

এ দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা অভিযুক্ত আয়াকে সাসপেন্ড করেছি।’’ জানা গিয়েছে, এ দিনই ওই আয়া হাসপাতালে আসেন বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চাইতে। যদিও তাঁর সঙ্গে কোনও আধিকারিকের দেখা হয়নি। হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করেন, ‘‘কাজ করে বকশিস হিসাবে টাকা চেয়েছিলাম। কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে সেটা ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি ক্ষমা চেয়ে কাজে ফিরতে চাই।’’

Nurse Health Medical
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy