জখম: চিকিৎসা চলছে সংঘর্ষে আহতের। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল সমর্থক দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধল পাণ্ডবেশ্বরের মধুসূদনপুর এলাকা। মঙ্গলবার ওই ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন দু’জন। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কোনও পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে এলাকায় নজর রাখা হচ্ছে।
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধে তাদের একটি স্থানীয় বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও অন্যটি তৃণমূল অনুমোদিত খনি-শ্রমিক সংগঠন কেকেএসসি-র সাধারণ সম্পাদক হরেরাম সিংহের অনুগামী বলে পরিচিত। জিতেন্দ্রবাবু অবশ্য দ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘বিষয়টি শ্রমিক সংগঠনের। যা বলার, আমাদের শ্রমিক নেতা হরেরামবাবুই বলবেন।’’ হরেরামবাবুর বক্তব্য, ‘‘এমন ঘটনায় দলের ক্ষতি হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বিশদে জানিয়েছি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ইসিএলের মধুসূদনপুর ৭ নম্বর ইনক্লাইন চত্বরে সভা করার জন্য এইচএমএসের শাখা সম্পাদক রামসাগর প্রসাদ সংগঠনের এবং তৃণমূলের পতাকা বাঁধছিলেন। অভিযোগ, কেকেএসসি-র জনা কুড়ি কর্মী-সমর্থক সেখানে হাজির হন। তাঁরা রামসাগরবাবুকে তৃণমূলের পতাকা টাঙাতে বারণ করেন। সে নিয়েই বচসা থেকে মারামারি বেধে যায়।
হরেরামবাবু দাবি করেন, সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিষণদেব নুনিয়া এইএমএসের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন। এ দিন এইচএমএসের সভায় কেন তৃণমূলের পতাকা টাঙানো হচ্ছে, সে প্রশ্ন তোলায় সাধন মাজি ও সুভাষ চক্রবর্তী নামে দু’জনকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। হরেরামবাবুর অভিযোগ, ‘‘বিষণদেবের নেতৃত্বে জনা চল্লিশ বহিরাগত আমাদের সংগঠনের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। দলের বেশ কয়েক জন পুরনো কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। এ সবের জেরে পুরনো কর্মীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন।’’
বিষণদেব অবশ্য দাবি করেন, ‘‘শ্রমিক সংগঠন আর দল এক নয়। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও শ্রমিক সংগঠনের যুক্ত থেকেও যে কোনও দলের সদস্য হওয়া যায়। কেকেএসসি-র লোকজন তা মানতে না চেয়ে রামসাগরকে পতাকা বাঁধতে বাধা দেয়ও চড়াও হয়। আমি সংগঠনের সমর্থকদের ডেকে প্রতিরোধ করেছি।’’
তৃণমূলের নানা সূত্রের দাবি, বছরখানেক ধরে পাণ্ডবেশ্বরে তৃণমূল বিধায়ক এবং খনি-শ্রমিক সংগঠনের নেতা হরেরামবাবুর অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ বাধছে। বিধায়কের অনুগামীদের অভিযোগ, হরেরামবাবু কেকেএসসি-র নানা পদে নিজের পছন্দের লোকজনকে বসাচ্ছেন। হরেরাম-ঘনিষ্ঠদের পাল্টা অভিযোগ, বিধায়কের মদতে অন্য দল থেকে আসা লোকজন প্রভাব বিস্তার করায় দলের পুরনো কর্মীরা অসম্মানিত হচ্ছেন। এইচএমএসে থাকলেও তৃণমূল করতে কোনও অসুবিধে নেই, মাস ছয়েক আগে জিতেন্দ্রবাবু শোনপুর বাজারি প্রকল্প চত্বরে একটি সভায় এ কথা জানান। তার পরে কেন্দা, কুনস্তরিয়া, পাণ্ডবেশ্বর ও বাঁকোলা এরিয়ায় কয়েকশো কেকেএসসি কর্মী যোগ দেন এইচএমএসে। বছরখানেক আগে সিপিএম থেকে দলে আসা এক কর্মীকে কেকেএসসি-র পদে না বসানো নিয়ে কোন্দল চরমে উঠেছে, দাবি তৃণমূলের এক সূত্রের। যদিও এ দিন গোটা বিষয়টি জিতেন্দ্রবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy