E-Paper

পরীক্ষা থেকে নিয়োগ, ইসি বন্ধে নানা সঙ্কট

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮টি পড়ুয়াদের হস্টেলে সাফাইকর্মীর সমস্যা রয়েছে। সেখানে নিয়োগের বারবার দাবি উঠেছে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৭
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

যাদবপুরের মতো বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েরও কর্মসমিতি বা এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠক স্থগিত হয়ে গেল। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ উপাচার্যের ঘরে ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইসি-র সদস্যদের মৌখিক ভাবে বৈঠক স্থগিত রাখার কথা জানান। সপ্তাহখানেক আগে উচ্চ শিক্ষা দফতর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরীকে চিঠি দিয়ে স্থায়ী উপাচার্য না থাকা পরিস্থিতিতে তাদের অনুমতি ছাড়া কর্মসমিতির (ইসি) বৈঠক ডাকা বেআইনি বলে জানিয়ে দিয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তী উপাচার্য গৌতম চন্দ্র শনিবার বলেন, “ইসি-র বৈঠক আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।” ইসি বা কর্মসমিতির বৈঠক বন্ধ থাকার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী উপাচার্য নেই। অস্থায়ী বা অন্তবর্তী উপাচার্যেরা কাজ করছেন। উচ্চ শিক্ষা দফতরের চিঠিতে ইসি বৈঠকের অনুমতি না দেওয়ার কথা জানানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, স্থায়ী উপাচার্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। এই অবস্থায় অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রকে উপাচার্যের দায়িত্ব পালনের অনুমোদন করা হয়েছে। সে জন্য কর্মসমিতি বা ইসির বৈঠক অন্তবর্তী উপাচার্য করলে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি’র ২০১৯ সালের নির্দেশনামা লঙ্ঘন (৩/৫) করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, প্রশাসনিক যে কোনও সিদ্ধান্ত কর্মসমিতি বা ইসি-র বৈঠকে তুলতে হয়। সেই সিদ্ধান্তই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে মানতে হয়। শুধু তাই নয়, দেড় লক্ষ টাকার উপর কোনও খরচের সিদ্ধান্ত হলে ইসি-কে জানাতে হয়। সেখানে আলোচনা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন বিভাগের কয়েক কোটি টাকা বিল পড়ে থাকবে। এ ছাড়া, পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের কাজ নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বারবার বিল পাঠাচ্ছে। তারা আর কাজ করবে না বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। কর্মসমিতির এক সদস্যের দাবি, “অন্তর্বতী উপাচার্য ওই সংস্থাকে ডেকে একটি সমাধানের পথে এগচ্ছিলেন। ইসি-বৈঠক না হলে ফের আটকে যাবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮টি পড়ুয়াদের হস্টেলে সাফাইকর্মীর সমস্যা রয়েছে। সেখানে নিয়োগের বারবার দাবি উঠেছে। বুধবারের ইসি বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল, সেই বৈঠক বাতিল হওয়ায় ওই সব হস্টেলের সমস্যা থেকেই গেল। তেমনই, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যে সংস্থা সাফাইয়ের দায়িত্বে রয়েছে, তার মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে। ইসি-তে সে নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। অস্থায়ী, চুক্তি ও দৈনন্দিন
কাজের জন্য মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্তও স্থগিত থাকবে। অনেক কর্মচারীর সবেতন ছুটি (ইএল) আটকে রয়েছে। ইসি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের ৩০০ দিনের বেতনের সিদ্ধান্ত আটকে থাকবে।

ইসি স্থগিত হওয়ার ফলে পরীক্ষা নিয়ামক দফতর সবচেয়ে সমস্যায় পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি বছরের সিমেস্টার ১, ৩, ৫-এর জন্য এবং সামনের বছরের ২, ৪ ও ৬ সিমেস্টারের পরীক্ষাসূচি তৈরি করে ইসিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই অনুমোদন আটকে গেলে পরীক্ষা-ব্যবস্থায় প্রভাব পড়বে। এমনকী, উত্তরপত্রের জন্য কাগজ কেনার প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা দরপত্র জমা পড়েছে। ইসিতে সিদ্ধান্ত না হলে তা-ও আটকে যাওয়ার পরিস্থিতি হতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy