Advertisement
E-Paper

নববর্ষের কার্ড বিলি তৃণমূল প্রার্থীর, বিতর্ক

সাত সকালেই কড়া নাড়ার আওয়াজে দরজা খুলে চমকে উঠলেন মানুষজন। ওপারে তখন হাসিমুখে, গলায় দলের উত্তরীয় জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রার্থী। হাতে একগোছা নববর্ষের কার্ড। ১৪২২-এর প্রথম দিনে এভাবে প্রচার করেই এক ঢিলে দুই পাখি, অর্থাৎ জনসংযোগ ও ভোটভিক্ষা করে ফেললেন মেমারি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী স্বপন ঘোষাল। বাসিন্দাদের কেউ কেউ ছুটির দিনের ঘুম চোখে খানিক বিরক্ত হলেও, অনেকেই খুশি হয়েছেন দোরগোড়ায় নেতাকে পেয়ে। স্বপনবাবুরও দাবি, শুভেচ্ছার বিনিময়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে, আর্শীবাদ করে ভালই সাড়া দিয়েছেন ভোটারেরা।

রানা সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪১
মেমারিতে কার্ড বিলি করছেন স্বপনবাবু। —নিজস্ব চিত্র।

মেমারিতে কার্ড বিলি করছেন স্বপনবাবু। —নিজস্ব চিত্র।

সাত সকালেই কড়া নাড়ার আওয়াজে দরজা খুলে চমকে উঠলেন মানুষজন। ওপারে তখন হাসিমুখে, গলায় দলের উত্তরীয় জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রার্থী। হাতে একগোছা নববর্ষের কার্ড।

১৪২২-এর প্রথম দিনে এভাবে প্রচার করেই এক ঢিলে দুই পাখি, অর্থাৎ জনসংযোগ ও ভোটভিক্ষা করে ফেললেন মেমারি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী স্বপন ঘোষাল। বাসিন্দাদের কেউ কেউ ছুটির দিনের ঘুম চোখে খানিক বিরক্ত হলেও, অনেকেই খুশি হয়েছেন দোরগোড়ায় নেতাকে পেয়ে। স্বপনবাবুরও দাবি, শুভেচ্ছার বিনিময়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে, আর্শীবাদ করে ভালই সাড়া দিয়েছেন ভোটারেরা।

যদিও এই কার্ড বিলি করার প্রবল সমালোচনা করছে বিরোধীরা। কংগ্রেস, সিপিএম থেকে বিজেপি, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই দাবি, এ ভাবে প্রচার নির্বাচনী বিধি ভাঙছে। মানুষকে প্রভাবিত করার অভিযোগও উঠেছে। যদিও বর্ধমানের মহকুমাশাসক (দক্ষিণ) নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “আমি এখনও ওই কার্ড বিলি সম্পর্কে কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হবে।”

বুধবার সকাল ৭টা থেকেই ঘরে ঘরে গিয়ে নববর্ষের ওই কার্ড বিলি করেন স্বপনবাবু। সন্ধ্যা পর্যন্ত তা চলে। সাদা খামে ভরা সবুজ রঙের ওই কার্ডের একদিকে লেখা রয়েছে ‘শুভ নববর্ষে ১৪২২’। তার নিচে রয়েছে একটি ছড়া— ‘নতুন আশার ফুল ফুটুক/ রং লেগে যাক নতুন ভোরে/ সুখের খবর ছড়িয়ে পড়ুক / ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সকলের ঘরে ঘরে।’ এর সঙ্গেই ‘নতুন বর্ষের প্রতিটি দিন মঙ্গলময় ও আনন্দনির্ঝর হয়ে উঠুক। সকলে সুখে থাকুন, আনন্দে থাকুন।’ এ কথাও লেখা রয়েছে। ‘ফুল’ শব্দটির পাশে ছাপা রয়েছে তৃণমূলের জোড়া ফুলের প্রতীক। আর কার্ডের উল্টো দিকে রয়েছে ১৪২২ সালের বাংলা ক্যালেন্ডার। তৃণমূলের দাবি, এই কার্ডে আপত্তিকর কিছুই নেই।

যদিও কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা সেলিম মোল্লার দাবি, ‘‘বছরের বিশেষ দিনটিতে মানুষকে এমন করে প্রভাবিত করা ঠিক নয়। এটা তো সরাসরি ভোটারদের উপহারও দিয়ে দেওয়া। আর সেটা নির্বাচনবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা। আমরা প্রশাসনের কাছে এই ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ জানাব।” বিজেপি নেতা ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যও বলেন, “নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ড বিলি করে স্বপনবাবু বেআইনি কাজ করেছেন। এটা তো ভোটারদের প্রভাবিত করতে তাঁদের উপহার দেওয়ার ঘটনা।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘তৃণমূলের প্রার্থীরা নানা ওয়ার্ডেই এ ধরণের উপহার দিয়ে চলেছেন। কোথাও জলের পাইপ লাইন দেওয়া হচ্ছে, কোথাও রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। মেমারি পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান যে ওয়ার্ডে দাঁড়িয়েছেন, সেই সাত নম্বরে তো নতুন রাস্তাঘাট তৈরি করা হচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশন, মহকুমাশাসক, বিডিও, সকলের কাছেই ওই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছি। কোনও ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। সে তুলনায় তো স্বপনবাবুর অপরাধ নেহাতই লঘু!” সিপিএমের নেতা অভিজিত কোঙার বলেন, “নববর্ষের কার্ড বিলি করাটা নির্বাচনী বিধির পরিপন্থী। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। কার্ডও জোগাড় করব। তারপরে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করব।”

তবে বিরোধীদের মতামত শুনে মুচকি হেসে স্বপনবাবু বলেন, “আমি তো মানুষকে নববর্ষের শুভেচ্ছাই জানাতে চেয়েছি। তবে তার ফাঁকে যদি একটু ভোটের প্রচার হয়ে যায়, তাহলে মন্দ কী?”

Rana Sengupta congress CPM Trinamool Election Municipal election BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy