Advertisement
E-Paper

মিড-ডে মিল বিলি করা নিয়ে চিন্তা নানা স্কুলে

পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘জমায়েত এড়িয়ে ধাপে-ধাপে অভিভাবকদের হাতে চাল-আলু তুলে দিতে হবে। প্রয়োজনে স্কুলগুলিকে অনেকগুলি কাউন্টার খুলতে হবে।’’

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৪:৩৭
কাটোয়ার একটি স্কুলে চলছে প্রস্তুতি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

কাটোয়ার একটি স্কুলে চলছে প্রস্তুতি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

করোনা মোকাবিলায় আজ, সোমবার বিকেল থেকে জেলার তিন শহর এলাকা ‘লকডাউন’ করার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধান মেনে কী ভাবে অভিভাবকদের হাতে আজ থেকে মিড-ডে মিল তুলে দেওয়া যাবে, সে নিয়ে চিন্তায় নানা স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। জমায়েত এড়াতে নানা পদ্ধতি নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন নানা স্কুল কর্তৃপক্ষ।

পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘জমায়েত এড়িয়ে ধাপে-ধাপে অভিভাবকদের হাতে চাল-আলু তুলে দিতে হবে। প্রয়োজনে স্কুলগুলিকে অনেকগুলি কাউন্টার খুলতে হবে।’’ রাজ্যে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ছুটিতে মিড-ডে মিল বন্ধ। অঙ্গনওয়াড়ির উপভোক্তাদের বাড়ি-বাড়ি চাল-আলু পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য সরকার। জেলাশাসকের দাবি, সব উপভোক্তার কাছে তা পৌঁছে গিয়েছে।

স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে দু’দিনের মধ্যে মিড-ডে মিলের চালু-আলু দেওয়ার কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ১১টা থেকে প্রথম ও পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিভাবকদের তা দেওয়া হবে। দুপুর ২টো থেকে দ্বিতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণির মধ্যে বিলি করতে হবে। মঙ্গলবার সকালে তৃতীয় ও সপ্তম শ্রেণি ও দুপুরে চতুর্থ ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের অভিভাবককে চাল-আলু দিতে হবে। কোনও ভাবেই পড়ুয়ারা যেন স্কুলে না আসে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলে ‘স্যানিটাইজ়ার’, সাবানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনও অভিভাবকের জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ থাকলে বা সম্প্রতি বিদেশ থেকে এলে, স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।

কাটোয়ার একটি স্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ১,৩০৩ জন। স্কুল সূত্রে জানা যায়, শনিবার আলু কেনার পরে, রবিবার চার-পাঁচ জন মিলে তা প্যাকেটে ভরেছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কমলকান্তি দাস বলেন, ‘‘এত পড়ুয়ার অভিভাবক স্কুলে এলে কী ভাবে জমায়েত এড়ানো সম্ভব? সাবান-স্যানিটাইজ়ারও তো অপ্রতুল।’’ দাঁইহাটের এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘পুরসভা থেকে মাইকে করে চাল-আলু বিলির কথা প্রচার করেছে। স্বাস্থ্যবিধান কতটা মানা যাবে সে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু সব অভিভাবক না এলে আলু নিয়ে কী করব, সেটাও আমাদের কাছে বড় মাথাব্যথা।’’

যদিও জেলায় আজ, সোমবার বিকেল ৩টের মধ্যেই চাল-আলু বিলি শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা রবিবার পর্যন্ত পর্যাপ্ত চালু-আলু জোগাড় করতে পারেননি। বিভিন্ন গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা আবার মনে করছেন, চাল-আলু বিলি শুরু হলে ছোটখাট মেলা বসে যাবে। এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘অভিভাবকেরা কতটা সচেতন থাকবেন, সেটা বড় প্রশ্ন।’’ বর্ধমানের একটি গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কথায়, ‘‘পর্যাপ্ত সাবানও পাওয়া যাচ্ছে না। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’’ গলসির একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস সাঁইয়ের কথায়, ‘‘এক সঙ্গে পাঁচ জনের বেশি অভিভাবককে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

বর্ধমানের বড়নীলপুরে একটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২৩৯ জন পড়ুয়ার অভিভাবককে ফোন করে কখন স্কুলে চাল-আলু দেওয়া হবে তা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রত্যেক অভিভাবককে সই করার জন্য পেন আনতে হবে। তা না হলে চাল-আলুর প্যাকেট দেওয়া যাবে না। বর্ধমান টাউন স্কুল আবার এক দিনেই সব পড়ুয়ার অভিভাবকদের হাতে চাল-আলু তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রচুর কাউন্টার করে এক দিনেই প্রক্রিয়া শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতিটি কাউন্টারেই তরল সাবানের ব্যবস্থা রাখা হবে।’’ কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌমেন জানার দাবি, পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।

Coronavirus Health Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy