Advertisement
২০ মে ২০২৪
COVID-19

ইদ, অক্ষয় তৃতীয়ার বাজার ‘ফিকে’

একই সঙ্গে অক্ষয় তৃতীয়া ও ইদ উৎসব থাকলেও বাজার মন্দা বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

অক্ষয় তৃতীয়ার আগের সন্ধ্যায় ফাঁকা ফলের দোকান। বর্ধমানে।

অক্ষয় তৃতীয়ার আগের সন্ধ্যায় ফাঁকা ফলের দোকান। বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৫:৪১
Share: Save:

অন্য বার দোকান-বাজারে থাকে বিপুল ভিড়। ফলের দোকান থেকে লক্ষ্মী-গণেশ প্রতিমা নিয়ে বসা ব্যবসায়ীদের সামনে ভিড় জমে যায়। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি আলাদা। অক্ষয় তৃতীয়ার আগের দিন বাজারে সেই জমজমাট ভাব নেই, দাবি ব্যবসায়ীদের। অক্ষয় তৃতীয়ার সঙ্গেই এ বার ইদের বাজারেরও সময়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিক্রিবাটার হাল ভাল নয় বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেন বর্ধমান শহর থেকে কালনা বা কাটোয়া, নানা শহরের ব্যবসায়ীরাই।

বর্ধমান শহরে বিসি রোড জুড়ে অক্ষয় তৃতীয়ার আগের দিন ছোট-বড় প্রতিমা বিক্রি হয়। ফল ও ফুলের দোকানেও থাকে ভিড়। কিন্তু এ বার বাজার হালকা। করোনা পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধের কারণে সকাল ৭টা থেকে ১০টা ও বিকেল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত বাজার-দোকান খোলা থাকছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিসি রোডে ছোট লক্ষী-গণেশ প্রতিমা নিয়ে বসেছিলেন কয়েকজন বিক্রেতা। তাঁদের দাবি, তেমন বিক্রি হয়নি। এক বিক্রেতা অলকা পালের কথায়, ‘‘৫০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছিলাম। দশটিও বিক্রি হয়নি।’’ উদয়পল্লির মৃৎশিল্পী জগন্নাথ পাল, কাঞ্চননগরের বলরাম পালেরা বলেন, ‘‘প্রতি বছর অক্ষয় তৃতীয়ার আগে লক্ষ্মী-গণেশ তৈরি করে বিসি রোড, কার্জন গেটে বিক্রির জন্য পাঠানো হত। এ বছর বরাতই মেলেনি। তাই আর তৈরি করিনি। যে সব প্রতিমা আগে থেকে ছিল, কেউ কিনতে এলে সেগুলিই বিক্রি করেছি।’’

কাটোয়া ও দাঁইহাট শহরের ব্যবসায়ীদেরও দাবি, ব্যবসার হাল খারাপ। আনাজ ও মুদির ব্যবসা ছাড়া, বেশিরভাগই ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাই অনেক ব্যবসায়ী এ বারও গত বছরের মতো কোনও রকমে অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো করবেন বলে ঠিক করেছেন। সোমনাথ দাস নামে কাটোয়ার এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘গত বছর ভেবেছিলাম, এ বার ভাল করে অক্ষয় তৃতীয়ার পুজো করব। কিন্তু এ বার করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। তাই শুধু ধূপ-ধুনো দিয়ে নামমাত্র পুজো সারব।’’ প্রবীর মিস্ত্রি নামে আর এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘অক্ষয় তৃতীয়ার পুজোর সময়ে কিছু বকেয়া মেলে। তা পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ আছে। নিয়মরক্ষার পুজো করব। এ ভাবে কত দিন ব্যবসা চলবে জানি না!’’

একই সঙ্গে অক্ষয় তৃতীয়া ও ইদ উৎসব থাকলেও বাজার মন্দা বলে দাবি কালনার ব্যবসায়ীদেরও। মিষ্টি ব্যবসায়ী রণজিৎ মোদক, দেবরাজ বারুইয়েরা বলেন, ‘‘এই সময়ে অনেক আগে থেকে প্রচুর মিষ্টি তৈরির বরাত থাকে। এ বার তা নেই বললেই চলে।’’ ব্যবসায়ীরা জানান, ইদের বাজারও তেমন ভাল নয়। চকবাজারের এক আনাজ ব্যবসায়ী ধ্রুব দাসের কথায়, ‘‘করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ায় লোকজন বাইরে বেরোচ্ছেন কম। যেটুকু বিক্রি হচ্ছে, সকাল ১০টার মধ্যে।’’ লাচ্ছা, সিমুই বিক্রেতাদের অনেকে দাবি করেন, বিক্রির জন্য যা মালপত্র এনেছিলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তার বেশিরভাগ দোকানেই পড়ে রয়েছে।

ইদের নমাজে ভিড় না করার বার্তা ইমামেরা আগেই দিয়েছেন। বুধবার থেকে কালনা, মেমারি, বড়শুল-সহ নানা এলাকার মসজিদগুলি জীবাণুমুক্ত করার কাজ হয়। অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে পুজো দিতে যাতে ভিড় না জমে, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নানা মন্দির কর্তৃপক্ষও। বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘এ বছর মনে হচ্ছে অন্য বারের মতো ভিড় হবে না। যাঁরা আসবেন, তাঁদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। দূরত্ব বজায় রেখে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

eid Akshaya Tritiya COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE