জেলায় করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউ রুখতে পাঁচ চিকিৎসককে নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করল স্বাস্থ্য দফতর। কাল, শনিবার থেকে তাঁরা চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করবেন। জেলায় সংক্রমণ কমতে থাকায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘নিউ বিল্ডিং’ থেকে ‘সারি’ ওয়ার্ড সরানোরও পরিকল্পনা নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি জেলার টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে ওই পরিকল্পনায় সিলমোহর দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান)প্রিয়ঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউয়ের প্রস্তুতি নিয়ে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শিশুদের চিকিৎসার পরিকাঠামো বাড়ানো হচ্ছে।’’
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নিউ বিল্ডিংয়ে প্রথমে করোনা-ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছিল। পরে, করোনা রোগীদের রাখা হয় রাধারানি ওয়ার্ডে। আর নিউ বিল্ডিংটিকে ‘সারি’ ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়। এখন সংক্রমণ কমতে থাকায় ‘সারি’ ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির সংখ্যা দিনে দুই অঙ্কের নীচে নেমে এসেছে। সে কারণেই সেটিকে সরিয়ে রাধারানি ওয়ার্ডের সাত ও আট নম্বর ঘরে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নিউ বিল্ডিংয়ে থাকা শল্য বিভাগটিও পুনরায় চালু করতে চাইছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সুপার প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আরএমবি-র (রাধারানি ওয়ার্ড) সাত ও আট নম্বর ঘরে সারি ওয়ার্ডের রোগীরা থাকবেন। পিছনের দরজা দিয়ে যাতায়াত হবে। আর বাকি ঘরগুলি কোভিড-ওয়ার্ড হিসেবেই রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া, যে সব অস্ত্রোপচার বন্ধ ছিল, ধীরে-ধীরে সেগুলি ফের চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ জেলা পরিষদের মেন্টর তথা করোনা-সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্য উজ্জ্বল প্রামাণিক বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউ শুরুর আগেই আরএমবি ওয়ার্ডটিকে ঝাঁ চকচকে করে তোলার কথা ভাবা হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুদের জন্য ৮০ শয্যার করোনা-ওয়ার্ড তৈরি করা হবে। মায়েদের থাকার আলাদা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালেও শিশুদের চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। ৯০ দিনের শিশু থেকে ১২ বছরের মৃদু সংক্রমিত বালক-বালিকাদের মায়েদের জন্য মহিলা ওয়ার্ডে শয্যার বিশেষ ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এক দিন থেকে ৯০ দিনের শিশুদের জন্য ‘এসএনসিইউ’ (সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট)-এর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনার জন্য নির্দিষ্ট ‘সিসিইউ’ ও ‘এইচডিইউ’-কে ‘পিকু’ (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট), ‘নিকু’ (নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট)-য় রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে। সে হিসেবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৫টি, কাটোয়া ও কালনায় ১০টি করে শয্যা নিয়ে ‘পিকু’ ইউনিট খোলা হবে।
সিএমওএইচ (পূর্ব বর্ধমান) প্রণব রায় বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউ রুখতে পাঁচ জনের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁরা শনিবার থেকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করবেন। মেডিক্যাল কলেজ ও দুই মহকুমা হাসপাতালেও শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামো বাড়ানো হচ্ছে।’’