Advertisement
E-Paper

লকডাউনে রমরমা নাবালিকা বিয়ের

জেলা প্রশাসন থেকে ‘চাইল্ড লাইন’-এর কাছে খবর পৌঁছনোয় রোখা গিয়েছে কিছু বিয়ে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে চুপিসাড়ে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে, আশঙ্কা আধিকারিকদের।

বর্ধমান

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০১:১২
প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

করোনার সংক্রমণ আটকাতে জারি হয়েছে ‘লকডাউন’। কিন্তু তার মধ্যেও নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা আটকানো যায়নি। জেলা প্রশাসন থেকে ‘চাইল্ড লাইন’-এর কাছে খবর পৌঁছনোয় রোখা গিয়েছে কিছু বিয়ে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে চুপিসাড়ে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে, আশঙ্কা আধিকারিকদের। ‘লকডাউন’ চলায় সব খবর এসে পৌঁছয়নি বলে মনে করছেন তাঁরা।
‘চাইল্ড লাইন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ মার্চ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে বর্ধমান সদর এলাকায় ৫৪টি নাবালিকার বিয়ে আটকানো হয়েছে। এর মধ্যে মার্চে ২৪টি, এপ্রিল, মে এবং জুনে এখনও পর্যন্ত দশটি করে বিয়ে আটকানো গিয়েছে। অন্য সময় প্রতি মাসে গড়ে ১৭-১৮টি করে নাবালিকার বিয়ে আটকানো হয়। সংস্থার জেলা কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ চৌবের বক্তব্য, ‘‘লকডাউনে অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও যেখান থেকেই খবর মিলেছে, আমরা বিয়ে আটকানোর ব্যবস্থা করেছি। নাবালিকার পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়েছি। তবে উল্টো দিক থেকে ভাবলে, লকডাউনের মধ্যেও কিন্তু নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা কমেনি।’’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের গোদায় সম্প্রতি একটি অভিযোগ মেলে। ভাতারের সুরুল গ্রাম থেকে সাইকেলে করে নাবালিকা পাত্রীকে আনা হয় গোদায়। অনেকে ভেবেছিলেন, ‘লকডাউন’-এর সময়ে পরিচিত বা আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছে। কিন্তু খবর পেয়ে ‘চাইল্ড লাইন’ আচমকা পুলিশকে নিয়ে অভিযান চালায়। দেখা যায়, সে রাতেই বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় চলছিল।

শক্তিগড়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এই খবর পেয়ে সম্প্রতি পুলিশ ও ‘চাইল্ড লাইন’-এর কর্মীরা সেখানে গেলে হুমকির মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মেয়েটিকে লুকিয়ে রেখে পরিজনেরা দাবি করতে থাকেন, ‘আপনারা আসায় মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছে’। খবর পেয়ে বর্ধমান ২ বিডিও অদিতি বসু পরিবারটির সঙ্গে দেখা করেন। অল্প বয়সে বিয়ে না করে পড়াশোনা চালিয়ে গেলে কী লাভ হতে পারে, তা বোঝান। তার পরেই বিয়ে রোখা যায়। জামালপুরের এক নাবালিকার স্থানীয় নবগ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমন খবর পেয়ে ‘চাইল্ড লাইন’ গিয়ে ১৬ বছরের মেয়েটিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তুলে সরকারি হোমে পাঠিয়েছে।

আধিকারিকদের ধারণা, ‘লকডাউন’-এ পুলিশ নানা কাজে ব্যস্ত, পড়শিরাও ঘরবন্দি— তাই প্রশাসনের কাছে খবর পৌঁছবে না বলে মনে করেছেন অনেক নাবালিকার অভিভাবকেরা। সে কারণেই তাঁরা বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন। জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিক প্রশান্ত রায় বলেন, ‘‘পূর্ব বর্ধমান জেলায় অনেকের মধ্যে সচেতনতা রয়েছে বলে বেশ কিছু খবর মিলেছে। আমরা পঞ্চায়েত স্তরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে নাবালিকা বিয়ে রোধে কর্মশালা করার কথা ভাবছি।’’
‘চাইল্ড লাইন’ সূত্রের দাবি, শুধু পরিবারের তরফে আয়োজনই নয়, বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করার প্রবণতাও দেখা গিয়েছে কিছু নাবালিকার মধ্যে। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘খবর পেলে সব ক্ষেত্রেই বিয়ে আটকানোর ব্যবস্থা করা গিয়েছে। যে সব নাবালিকা স্বেচ্ছায় বিয়ে করতে চেয়েছে, তাদের ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি’তে পেশ করে হোমে রাখা বা দু’মাস অন্তর কমটির সামনে হাজিরা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

lockdown coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy