দু’দিন ধরে খোঁজ মিলছিল না যুবকের। শনিবার রাতে গ্রামের একটি পুকুরে জাল ফেলে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। অভিযোগ, এর পরেই গ্রামছাড়া হয়ে যান মৃত মানিক টুডুর (২৭) এক ‘বন্ধু’। তা জানার পরেই ওই ‘বন্ধু’র বাড়িতে চড়াও হয় জনতা। রাতে বাড়ি ভাঙচুর করা হয়, পরে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। রবিবার বিকেলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে দেহ মেমারির দুর্গাপুর পঞ্চায়েতের সিমলা গ্রামে ফিরলে সৎকারে ‘বাধা’ দেয় বিজেপি। ফের ময়না-তদন্তের দাবিতে তারা বিক্ষোভ দেখায়। তা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানিক কলকাতা ময়দানে ফুটবল খেলতেন। এখন স্থানীয় ক্লাবে খেলেন। অভিযোগ, পেশায় দিনমজুর মানিককে শেষ দেখা গিয়েছিল তাঁর বন্ধু, পেশায় টোটোচালক উত্তম রায়ের সঙ্গে। মৃতের মা পূর্ণিমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘উত্তমের সঙ্গে বৃহস্পতিবার টোটোয় করে মানিক দিনরাত ঘুরেছে। শুক্রবার সকালে ফেরেনি। খোঁজখবর নিলে সবাই বলেন, মানিকের সঙ্গে দেখা হয়নি। উত্তম জানায়, সে বাড়ির কাছে ছেলেকে নামিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছিল।’’ পরিবারের দাবি, খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, গ্রামের একটি পুকুরে বৃহস্পতিবার রাতে কিছু পড়ার আওয়াজ হয়েছে। জাল ফেলে মানিকের দেহ উদ্ধার করা হয়।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে দাঁড়িয়ে মৃতের দাদা বাবুরাম অভিযোগ করেন, “পাঁকে মুখ গুঁজে পড়েছিল ভাই। দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, কেউ খুন করে ফেলে দিয়ে পালিয়েছে।’’ মৃতের পরিবারের দাবি, মেমারি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মৃতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, মানিকের খোঁজ চলাকালীন উত্তমকে দেখা যায়নি। পুকুরে জাল ফেলা হয়েছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তিনি গ্রাম থেকে পালিয়ে যান। তাতেই সন্দেহ গিয়ে পড়ে তাঁর উপরে। উত্তমের বাড়িতে শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত দফায়-দফায় হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। অ্যাসবেস্টসের ছাউনি ও ইটের গাঁথনি দেওয়া দু’কামরার বাড়িতে প্রথমে ভাঙচুর হয়। তার পরে অগ্নিসংযোগ হয়। উত্তমের স্ত্রী রেবা রায়ের দাবি, ‘‘হামলার মুখে পড়েই আমার স্বামী পালাতে বাধ্য হয়েছেন। মানিক ও আরও এক জন উত্তমকে নিয়ে টোটোয় ঘুরেছে। আমার স্বামী নির্দোষ। আমার সর্বস্ব চলে গেল!’’