অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিপুল সম্পত্তির তথ্য চার্জশিটে উল্লেখ করল সিবিআই। শুক্রবার সকালে আসানসোলের আদালতে এই মামলায় যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তার ছত্রে ছত্রে তৃণমূলের দাপুটে নেতার একাধিক সম্পত্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে ১৮ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট, ৫৩টি দলিল। পাশাপাশি অনুব্রতের নামে চার্জশিটে প্রায় ২৫টি বেনামি দলিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এই বিপুল সম্পত্তি রয়েছে অনুব্রতের পরিবারের।
অনুব্রতের নামে চার্জশিটে চালকলের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তিনটি চালকলের কথা বলা হয়েছে। চালকলগুলির নামে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। বস্তুত, এই মামলায় অনুব্রতের গ্রেফতারের পর পরই তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছিল যে, তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার নামে একাধিক সম্পত্তির হদিস পেয়েছে তারা। তদন্তে নেমে বীরভূমের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক চালকলে হানা দেন তদন্তকারীরা। ওই চালকলগুলির সঙ্গে অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের যোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। কলকাতা ও বীরভূমে অনুব্রতের প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডল ও কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে একাধিক সম্পত্তি সিবিআইয়ের আতশকাচের তলায় রয়েছে। যদিও তাঁর কোনও বেনামি সম্পত্তি নেই বলে দাবি করেছেন ‘কেষ্ট’।
৩৫ পাতার চার্জশিটে অনুব্রতের নামে একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৯, ১২০বি, ৪২০, ৭,৯, ১১, ১২, ১৩(২), ১৩(১)(ডি) ধারা উল্লেখ করেছে সিবিআই। অনুব্রতের দেহরক্ষী সহগল হোসেনের সঙ্গে গরু পাচার-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে ফোনে কথা হত বলেও চার্জশিটে তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
গ্রেফতারের ৫৭ দিনের মাথায় অনুব্রতের নামে শুক্রবার চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। শুক্রবার সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে বিচারক রত্না রায়ের এজলাসে অনুব্রতের নামে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। এ নিয়ে মোট তিনটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হল। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। চার্জশিটে মোট ১২ জনের নাম রয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থার নজরে রয়েছে অনুব্রতের দেহরক্ষী সহগল হোসেনের সম্পত্তিও। শুক্রবার সহগলকে জেরা করতে আসানসোল জেলে গিয়েছেন ইডির একটি বিশেষ দল। সম্পত্তির উৎস কী, এ ব্যাপারে জানতেই সহগলকে জেরা করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অগস্ট সকালে বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রতের বাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে হানা দিয়েছিল সিবিআই। তার কিছু সময় পরেই গরু পাচার মামলায় তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে আটক করা হয়। পরে গ্রেফতার হন অনুব্রত। তার পর যত তদন্ত এগিয়েছে, ততই পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো একের পর এক তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy