Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

টাকার লোভে যুবককে খুন, গ্রেফতার দুই দাদা

কেন খুন? তদন্তে নেমে পুলিশ জানায়, নিহতের পরিবার সূত্রে অভিযোগ করেছে, মূলত টাকার লোভেই খুন করা হয়েছে ওই যুবককে।

চলছে দেহ উদ্ধার। কুলটিতে শনিবার। নিজস্ব চিত্র

চলছে দেহ উদ্ধার। কুলটিতে শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০১:৫০
Share: Save:

বেশ কয়েক দিন নিখোঁজ থাকার পরে এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়েছে পরিত্যক্ত কয়লা খনি থেকে। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ কুলটির আলডি লাগোয়া নরসমুদার ৮ নম্বর বাউড়ি বস্তির ঘটনা। পুলিশ জানায়, খুনের অভিযোগে নিহত যুবকের খুড়তুতো দুই দাদাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেহ উদ্ধারের পরে অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ উঠেছে পড়শিদের একাংশের বিরুদ্ধে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৮ মে সন্ধ্যা ছটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন আলডি গ্রামের তাপস বাউড়ি (২৪)। তাঁর সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা বাদেও বাড়ি না ফেরায় নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন নিহতের বাবা রবীন বাউড়ি। এর পরে এ দিন সকালে খাদান থেকে তাপসের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের দাবি, খুন করে ওই যুবককে খাদানে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু কেন খুন? তদন্তে নেমে পুলিশ জানায়, নিহতের পরিবার সূত্রে অভিযোগ করেছে, মূলত টাকার লোভেই খুন করা হয়েছে ওই যুবককে। ইসিএলের পাটমোহোনা কোলিয়ারির কর্মী রবীনবাবু পুলিশকে জানান, মাস ছয়েক আগে তাঁর দিদি পাতনিদেবী ইসিএলের মিঠানি কোলিয়ারি থেকে অবসর নিয়েছেন। অবিবাহিত পাতনিদেবী অবসরকালীন টাকার একাংশ তিন ভাইপো তাপস এবং তাঁর খুড়তুতো দুই দাদা সাগর ও রাকেশের মধ্যে ভাগ করে দেন। রবীনবাবুর অভিযোগ, ‘‘এর পরে থেকেই দুই ভাইপো নানা ছল করে ছেলের কাছ থেকে টাকা নিতে চাইছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় ছেলেকে খুন করা হয়।’’

তাপস নিখোঁজ হওয়ার পরেই পরিবার ও পড়শিদের একাংশ সাগর ও রাকেশের নামে অভিযোগ করেন। তার পরেই শুক্রবার রাতে ওই দু’জনকে আটক করে কুলটি থানার পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ক্রমাগত জেরার মুখে ধৃতেরা খুনের কথা স্বীকার করেছেন। শুক্রবার রাতেই ওই দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে যে খাদানে দেহটি ফেলে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে যায় পুলিশ। তার পরে এ দিন সকালে ওই খাদান থেকেই দেহটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তাপসকে কোনও ভাবে অজ্ঞান করে খাদানে ফেলে দেওয়া হয়। দেহটির ময়না-তদন্ত করানো হয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে জানান পুলিশকর্তারা।

ধৃতদের এ দিন আসানসোল আদালতে তোলা হলে তাঁদের পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

শনিবার দেহ উদ্ধারের পরেই আলডি গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার অভিযুক্তদের আটক করার পরেই গভীর রাতে দুই অভিযুক্তের পরিবারের লোকজনেরা বাড়িতে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যান বলে জানা গিয়েছে। শনিবার দুপুরে নিহত যুবকেরর পড়়শিদের একাংশ অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুড় চালান। গোলমাল রুখতে এলাকায় পুলিশি টহল রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE