Advertisement
E-Paper

Durga Puja 2021: ঘরেই পড়ে বহু সাজ, দাবি বনকাপাশিতে

শোলাশিল্পীদের অনেকেরই দাবি, পেশায় টান পড়ায় অনেক প্রবীণ শিল্পীর হাতেও কার্যত কাজ নেই। সংসার চালাতে পেশা বদলের দিকে ঝুঁকছেন কেউ-কেউ।

প্রণব দেবনাথ

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৪৯
কাজে ব্যস্ত শোলাশিল্পীরা।

কাজে ব্যস্ত শোলাশিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র।

কয়েক বছর আগেও পুজোর কিছু দিন আগে থেকে নাওয়া-খাওয়ার সময় মিলত না। কাজ চলত দিন-রাত এক করে। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বনকাপাশির শোলাশিল্পীদের গ্রামে সে ব্যস্ততা এখন নেই। গত বার করোনা-পরিস্থিতির মধ্যে পুজোয় শোলার সাজের বরাত মিলেছিল খুব কম। এ বার পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও, তা বিশেষ আশা জাগানোর মতো নয়— এমনই দাবি গ্রামের শিল্পীদের।

বনকাপাশির শোলাশিল্পীদের অনেকেরই দাবি, পেশায় টান পড়ায় অনেক প্রবীণ শিল্পীর হাতেও কার্যত কাজ নেই। সংসার চালাতে পেশা বদলের দিকে ঝুঁকছেন কেউ-কেউ। প্রশাসন অবশ্য জানায়, শোলাশিল্পীদের মনোবল বাড়াতে সরকারি ভাবে কিছু দিন আগে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের অধীন হস্তশিল্প বিভাগের উদ্যোগে ‘সমন্বিত নকশা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এলাকার ২৮ জন মহিলা-সহ চল্লিশ জন শিল্পীকে দু’মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শিল্পীরা ভাতাও পাবেন। প্রশিক্ষণ শেষে, তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রী যাতে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগে বিক্রি করা যায়, সে ব্যবস্থাও হবে বলে আশ্বাস।

আড়াই হাজার পরিবারের এই গ্রামে প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই শোলার নানা কাজ হয়। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ সে কাজ করেই সংসার চালান। প্রায় আশি বছর ধরে এই গ্রামের শোলা শিল্পের খ্যাতি। গ্রামের একই পরিবারের তিন প্রজন্মের শিল্পী শোলার কাজের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু সেই শিল্পকর্ম করে এখন সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে বলে গ্রামবাসীর দাবি। তাঁরা জানান, আগে প্রতিমার সাজ, চাঁদমালা, টোপর তৈরি করে রোজগার হয়ে যেত। করোনা-কালে তা আর হচ্ছে না।

প্রবীণ শোলাশিল্পী আশিস মালাকার বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে বরাত বাতিলই হয়েছে বেশি। তা ছাড়া, অতীতে যেমন ডাকের সাজের বদলে শোলার সাজ জায়গা করে নিয়েছিল, ঠিক একই ভাবে এখন শোলার জায়গায় কৃত্রিম প্লাস্টিক বা ফাইবারের সাজ এসে গিয়েছে। ফলে, অনেক শিল্পীই পরিবারের পুরানো পেশা বদলের দিকে ঝুঁকছেন।’’ শিল্পী
সন্তোষ পাল, মিন্টু দাস, তন্দ্রা ঘোষেদের দাবি, গত বছরের মতো এ বারও পুজোর বরাত বিশেষ নেই।
শেষ মুহূর্তে কিছু পুজো উদ্যোক্তা
বরাত দিলেও, তা যথেষ্ট নয়। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বাজেট কাটছাঁট করে পুজো হচ্ছে। ওই শিল্পীদের কথায়, ‘‘অনেক শোলার সাজ ঘরেই পড়ে রয়েছে। করোনা-পরিস্থিতির আগে যা বরাত মিলত, সে তুলনায় এ বার প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ মিলেছে। তা-ও আগের থেকে কম দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। লাভ প্রায় কিছুই থাকবে না!’’

যদিও হস্তশিল্প বিভাগের দাবি, দেশে-বিদেশে শোলাশিল্পের কদর এখনও আছে। এই শিল্পের বিনির্মাণ ঘটানো হচ্ছে। দফতরের তরফে প্রশিক্ষণ দিতে আসা সুদীপ্ত ঘোষের দাবি, ‘‘বনকাপাশির শোলাশিল্পের সুদিন ফেরানো হবে।’’

Durga Puja 2021
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy