Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Bhatar

চিকিৎসককে কার্তুজে জড়িয়ে ‘মাওবাদী চিঠি’, তদন্ত শুরু ভাতারের সরকারি হাসপাতালে

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীরা ভয় এবং আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এই চিঠি আদতে কারা দিয়েছে, তা পুলিশই বলতে পারবে।

Bhatar

ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:০৬
Share: Save:

পূর্ব বর্ধমানের ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দন্ত্য চিকিৎসককে ‘মাওবাদী নামাঙ্কিত’ হুমকি চিঠি দেওয়ার ঘটনার তদন্ত শুরু করল প্রশাসন। বিষয়টিকে যে মোটেই হালকা ভাবে নেওয়া হচ্ছে না, তার প্রমাণ মিলল বুধবার। হুমকি চিঠির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে হাজির হলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল।

অর্পণা মুখোপাধ্যায় নামে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দন্ত্য চিকিৎসক মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ হাসপাতালের বহির্বিভাগের দরজা খুলে ঢুকে দেখেন, কার্তুজ-সহ একটি চিঠি পড়ে আছে। তিনি জানান, ওই চিঠিটি লাল কালি দিয়ে লেখা। তাতে বলা হয়, বুধবারের মধ্যে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। না হলে তাঁর গোটা পরিবারের প্রাণসংশয় আছে। অর্পণা আরও জানান, চিঠিতে জায়গার নাম এবং সময়ের কথা উল্লেখ করা আছে। চিঠির প্রেরক হিসাবে রয়েছে তপন মাহাতো নামে এক জনের নাম (ওই চিঠির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি)। এই চিঠির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকের মধ্যেও। এমন চিঠি পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই চিকিৎসক। তিনি বিষয়টি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানান। সঙ্গে সঙ্গে ভাতার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় ভাতার থানায়। দায়ের হয় এফআইআর। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, চিঠির সঙ্গে থাকা কার্তুজটি তাজা। বুধবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম এবং সহকারী স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী যান হাসপাতালে। সেখানে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিত্রা ভৌমিককে নিয়ে একটি বৈঠক করেন তাঁরা। হাসপাতালে উপস্থিত হন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীও।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মীরা ভয় এবং আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এই চিঠি আদতে কারা দিয়েছে, তা পুলিশই বলতে পারবে। তিনি মঙ্গলবার বিকেলেই বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসককে জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য ভবনকেও খবর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে এক সপ্তাহের মধ্যে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কথা বলা হয়েছে বলে জানান মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এমনিতেই হাসপাতালে সব সময়ে সিভিক ভলান্টিয়ার থাকেন। এখন থেকে এক জন পুলিশ অফিসারও থাকবেন। চিকিৎসক এবং কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে ভিজ়িটিং কার্ড চালুর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

তবে বিধায়ক মানগোবিন্দ মাওবাদী চিঠির কথা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘এ সব ফালতু চিঠি। এখানে মাওবাদীদের কোনও সংগঠন নাই।’’ যাঁর নামে এই চিঠি এসেছে, সেই দন্ত্য চিকিৎসক সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও কথা বলতে চাননি। এ নিয়ে ভাতার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অমিত কুমার হুইয়ের মন্তব্য, ‘‘এমনিতেই হাসপাতালে রোগীর খুব চাপ। তাই নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগানো উচিত। বাকি তো পুলিশ তদন্ত করছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানান, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhatar Letter Maoist Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE