E-Paper

দূষণ-তালিকায় শীর্ষে দুই শহর

মাঝে মাঝে দিল্লির দূষণের মাত্রাকেও ছাপিয়ে যাচ্ছিল দুর্গাপুর। গত ২৯ নভেম্বর দুর্গাপুরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে উচ্চস্তরীয় বৈঠক হয়।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৫
কারখানা থেকে খোলা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সামগ্রী। বাড়ছে দূষণ। দুর্গাপুরে ইন্দো- আমেরিকান মোড় লাগোয়া এলাকায়।

কারখানা থেকে খোলা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সামগ্রী। বাড়ছে দূষণ। দুর্গাপুরে ইন্দো- আমেরিকান মোড় লাগোয়া এলাকায়। ছবি: বিকাশ মশান।

গত কয়েক দিন ধরে দুর্গাপুরের বাতাসের সার্বিক গুণমান হয় ‘খারাপ’, অথবা ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এমনকী, বুধবার দূষণের নিরিখে সারা দেশে প্রথম স্থানে উঠে এসেছিল এই শিল্পশহর। কেন্দ্রীয়দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বুলেটিন অনুযায়ী, বাতাসের সার্বিক গুণমান সূচকে দেশের ২৬৫ শহরের মধ্যে এদিন প্রথম ছিল দুর্গাপুর। পিছিয়ে ছিল না আসানসোলও। দ্বিতীয় স্থানে ছিল এই শহর।

পর্ষদ সূত্রে জানা যায়, বাতাসে গুণমানের সূচক ২০১-৩০০ হলে খারাপ, ৩০১-৪০০ হলে খুব খারাপের পর্যায়ে পড়ে। এ বার শীতের শুরু থেকেই দুর্গাপুরের বাতাসের সার্বিক গুণমান দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝে মাঝে দিল্লির দূষণের মাত্রাকেও ছাপিয়ে যাচ্ছিল দুর্গাপুর। গত ২৯ নভেম্বর দুর্গাপুরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে উচ্চস্তরীয় বৈঠক হয়। এর পরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তাতে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতিও হয়। তবে বুধবার দুর্গাপুরের সার্বিক গুণমানের সূচক দাঁড়ায় ৩৪৭। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আসানসোলের সূচক ছিল ৩১২।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই দুর্গাপুরে বাতাসের সার্বিক গুণমান উদ্বেগজনক রয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ও আসানসোলের সূচক ছিল যথাক্রমে ২৯২ এবং ২৬৮। পর্ষদ সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরের বাতাসের গুণমান সূচক ১০ ডিসেম্বর ছিল ৩০৬, ৯ ডিসেম্বর ৩৪০, ৮ ডিসেম্বর ৩০৪, ৭ ডিসেম্বর ২৯৩, ৬ ডিসেম্বর ২৮৮। বৃহস্পতিবার পর্ষদের স্বয়ংক্রিয় দূষণ পরিমাপক যন্ত্রের তথ্য অনুযায়ী, বিকেল ৫টা নাগাদ সিধো-কানহু স্টেডিয়াম এলাকায় সূচক ছিল ১৮৮, ডিএসপি টাউনশিপের বি-জ়োনের মহিস্কাপুর রোড এলাকায় ৩১৭, পিসিবিএল আবাসিক এলাকায় ৩৭০। চিকিৎসকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে ফুসফুসে সংক্রমণ, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ দেখা দেয়। দীর্ঘদিন এমন চললে ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজ়িজ়’ (সিওপিডি) হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের সমস্যা জটিল হয়।

পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওয়া কম বইছে, তাই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। বাতাসে জমে থাকা ধূলিকণা সরছে না। জেলার সব কারখানাকে ট্রাকে করে ছাই নিয়ে যাওয়ার সময়ে ঢাকা দেওয়া, ওয়াটার স্প্রিংলার চালিয়ে লাগোয়া রাস্তায় জল ছিটানো, সব সময়ে দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ঝাড়খণ্ড থেকে উত্তুরে হাওয়ার সঙ্গে ঢোকা দূষণ আটকাতে ত্রিস্তরীয় গাছের পাঁচিল গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া, স্থানীয় ভাবে শহরের বায়ু দূষণের কারণ খুঁজে বার করতে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে দায়িত্ব দিয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pollution Durgapur Asansol

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy