সংস্থার জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে ফের বাধার মুখে পড়ল ইসিএল। বুধবার রাতে কুলটির চিনাকুড়িতে অভিযানে গেলে সংস্থার আধিকারিকদের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভাঙচুর করা হয় ইসিএলের নিরাপত্তারক্ষীদের গাড়ি ও পে-লোডার। জমি দখল করে রাখার অভিযোগে সংস্থার এক কর্মীকে সাসপেন্ড করেছে ইসিএল। দখল উচ্ছেদের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে কিছু বাসিন্দা রাস্তা অবরোধ, ফাঁড়িতে বিক্ষোভও করেন।
ইসিএলের সোদপুর এরিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চিনাকুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকায় সংস্থার জমিতে প্রচুর বেআইনি নির্মাণ গড়ে উঠেছে। সেই জমিই দখলমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। চিনাকুড়ির তিন নম্বর খনি অঞ্চলে কোলিয়ারি আবাসন লাগোয়া এলাকায় রয়েছে কিছু অবৈধ নির্মাণ। খনি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বারবার সেগুলি ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারিতেও কাজ হয়নি। শেষে বুধবার রাতে এলাকায় গিয়ে নির্মাণগুলি ভাঙা শুরু করেন ইসিএলের আধিকারিকেরা। তখনই তাঁদের বাধার মুখে পড়তে হয়।
সোদপুর এরিয়ার পার্সোনেল ম্যানেজার এইচ কে চৌধুরী বলেন, ‘‘অবৈধ নির্মাণকারীরা আমাদের রক্ষীদের গাড়ি ও পে-লোডার ভাঙচুর করে। তবে আমরা পিছু হঠিনি। নির্মাণ ভেঙে দিয়েছি।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে এলাকার অবৈধ নির্মাণকারীরা আচমকা চিনাকুড়ি রোড অবরোধ করে। ফলে, খনির কয়লা পরিবহণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। বিক্ষুব্ধরা নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখায়। নির্মাণ ভেঙে দেওয়া ‘অমানবিক’ দাবি করে ফাঁড়িতে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। যদিও ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘আমরা অবৈধ নির্মাণের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। বিভাগীয় তদন্তে এই দখলদারির ঘটনায় এক ইসিএল কর্মীর জড়িত থাকার অভিযোগ মেলায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’
ইসিএলের জমি দখল করে সেখানে পাকা নির্মাণ তোলার ঘটনা নতুন নয়। রানিগঞ্জ-আসানসোল খনি অঞ্চলে অনেক জায়গাতেই এই ছবি দেখা যায়। খনি কর্তৃপক্ষ জানান, বহু বছর আগে সংস্থার জায়গায় ক্লাব বা ধর্মীয় স্থান অথবা কমিউনিটি সেন্টার গড়ার চল ছিল। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে ঢালাই ছাদ-সহ পাকা বাড়ি তৈরি করে নেওয়া হচ্ছে। অনেকে আবার ইসিএলের আবাসনগুলি নিজেদের ইচ্ছে মতো সাজিয়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, চুরি করে সংস্থার বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগও নিচ্ছে। ইসিএলের অভিযোগ, কিছু দালাল ও জমি মাফিয়া এই কারবার ফেঁদে বসেছে। ভুল বুঝিয়ে টাকা নিয়ে সাধারণ মানুষজনকে এই জমি বা আবাসন বিক্রি করছে তারা। নীলাদ্রিবাবু বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ মতো আমরা দখল উচ্ছেদ করছি। আরও কিছু এলাকায় নোটিস দেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সালানপুরের বেশ কিছু অঞ্চলে বাড়ি-বাড়ি নোটিস দেওয়া হয়েছে। ডাবর, বনজেমাহারি, মোহনপুর, পাহাড়গোড়া এলাকায় খনি সম্প্রসারণের জন্য এই এলাকা দখলমুক্ত করা জরুরি বলে ইসিএল কর্তাদের দাবি।