স্নেহ: খুদেদের সঙ্গে ইরাদেবী। নিজস্ব চিত্র
স্কুলই ধ্যানজ্ঞান ছিল স্বামীর। সবসময় বলতেন স্কুলের জন্য কিছু করে যেতে চান। তিনি না পারলেও স্বামীর স্মৃতিতে স্কুলের উন্নয়নে ১ লক্ষ টাকা দান করলেন বৃদ্ধা স্ত্রী। কাটোয়ার জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের যমুনাপাতাই প্রাথমিক স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইরা দে-র টাকায় লোহার ফটক, তোরণ তৈরি হয়েছে। স্কুলের সীমানা পাঁচিলের কাজও শেষ করা হয়েছে।
দাঁইহাটের রামসীতাপাড়ার বাসিন্দা বছর একষট্টির ইরাদেবী সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তাঁর স্বামী মদনমোহন দে দীর্ঘ ১৮ বছর শিক্ষকতা করেছেন এই স্কুলেই। বছর নয়েক আগে গঙ্গায় ডুবে মৃত্যু হয় দে দম্পতির একমাত্র ছেলে মনজিৎময়ের। ছেলের মৃতুর বছরখানেকের ভিতর মারা যান দাঁইহাট পুরসভার কংগ্রেসের প্রাক্তন পুরপ্রধান মদনবাবুও। তারপর থেকেই স্কুলের জন্য কিছু একটা করার কথা ভাবেন ইরাদেবী। তিনি জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দেব ঘোষের সঙ্গে নানা সমস্যা, প্রয়োজন নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। উঠে আসে, সীমানা পাঁচিলের অভাবে কচিকাঁচাদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার কথা। সেই মতো গত মার্চে ১ লক্ষ ১ হাজার টাকা স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন ইরাদেবী। সেই টাকায় ফুট ছয়েক লম্বা ও ১০৩ ফুট বিস্তৃত পাঁচিল তৈরি হয়েছে। নির্মিত হয়েছে ফটক ও তোরণ।
জয়দেববাবু জানান, ‘‘খুদে পড়ুয়ারা খেলতে গিয়ে প্রায়ই বড় রাস্তায় বেরিয়ে পড়ত। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় আমরা ওদের খেলতেও নিষেধ করতাম।’’ শুক্রবার ওই পাঁচিল ও তোরণের উদ্বোধন করে নিশ্চিন্ত জয়দেববাবু বলেন, ‘‘এ বার ছেলেমেয়েরা যত খুশি খেলুক, চিন্তা নেই।’’ এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নরেশচন্দ্র মণ্ডল। উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সহকরী বিদ্যালয় পরিদর্শক মানবেন্দ্র ঘোষও।
আর ইরাদেবী বলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় ছেলেকে হারিয়েছি। আর কোনও মায়ের কোল যাতে দুর্ঘটনায় শূন্য না হয় সেই চেষ্টাই করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy