Advertisement
E-Paper

পরীক্ষা পিছিয়ে গেল বহু স্কুলে

বন্‌ধে রোজকার বাজারহাট, অফিস যাতায়াতে তেমন প্রভাব না পড়লেও পরীক্ষা পিছিয়ে গেল জেলার বহু স্কুলে। কয়েকটা স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, সময়ে প্রশ্নপত্র পাননি তাঁরা। আবার অনেকের দাবি, ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধের কথা ভাবে পরীক্ষা পিছোনো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
আসানসোলে স্কুলের পথে। সোমবার। —শৈলেন সরকার

আসানসোলে স্কুলের পথে। সোমবার। —শৈলেন সরকার

বন্‌ধে রোজকার বাজারহাট, অফিস যাতায়াতে তেমন প্রভাব না পড়লেও পরীক্ষা পিছিয়ে গেল জেলার বহু স্কুলে। কয়েকটা স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, সময়ে প্রশ্নপত্র পাননি তাঁরা। আবার অনেকের দাবি, ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধের কথা ভাবে পরীক্ষা পিছোনো হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা পিছোনোর সিদ্ধান্ত আগে কেন জানানো হল না, পড়ুয়াদের এসে ফিরে যেতে যে হয়রানি হল, তার কোনও উত্তর মেলেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাংশ শিক্ষকের অবশ্য দাবি, তৃণমূল বন্‌ধের বিরোধীতা করলেও তৃণমূল শিক্ষা সেলের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা স্কুলে ফোন করে পরীক্ষা না নেওয়ার কথা জানান। তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি রথীন মল্লিকের যদিও দাবি, তাঁদের তরফে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। পুরোটাই সংশ্লিষ্ট স্কুলের সিদ্ধান্ত।

শিক্ষকেরা জানান, বছরে তিন ভাগে পরীক্ষা নেওয়া হয়। প্রশ্ন হয় তিন ভাবে। কিছু স্কুল নিজেরা প্রশ্ন তৈরি করে। কিছু স্কুল প্রশ্ন পায় তৃণমূল শিক্ষা সেল ঘনিষ্ঠ সংস্থা ‘জেলা বিদ্যালয় গুচ্ছ’র কাছ থেকে। আবার এবিটিএ ঘনিষ্ঠ ‘শিক্ষক সংসদ ট্রাষ্ট’ও প্রশ্ন করে। পরীক্ষা দিন সাতেক আগেই প্রশ্ন তৈরি হয়ে যায়। ফলে এ দিনের আগে থেকে ঘোষিত পরীক্ষার প্রশ্নও যে তৈরি ছিল, তা ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসার পরে জানানো হয় পরীক্ষা পিছিয়ে গিয়েছে।

বন্‌ধের দিনে। সোমবার কাটোয়া স্টেশনে রোজকার মতোই ভিড়। নিজস্ব চিত্র।

কালনা ১ ব্লকের সিমলন অন্নপূর্ণা কালী বিদ্যামন্দির, কালনা ২ ব্লকের ‘জেলা বিদ্যালয় গুচ্ছ’ সংস্থার কাছে প্রশ্ন কেনা পূর্ব সাতগাছিয়া উচ্চবালিকা বিদ্যালয়, তেহাট্টা ঊচ্চবিদ্যালয়, অকালপৌষ উচ্চবিদ্যালয়, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট বালিকা বিদ্যালয়, মন্তেশ্বর ব্লকের কাইগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়, মালডাঙা কাদম্বিনী বালিকা বিদ্যালয়-সহ জেলার বহু স্কুলই ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দেয় বনধের কারণে পরীক্ষা হবে না। পরীক্ষাটি হবে সাত ডিসেম্বর। শিক্ষকদের দাবি, সকালেই তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয় অনেকের পৌঁছতে অসুবিধে হতে পারে। তাই পরীক্ষা পিছিনো হোক। সিমলন অন্নপূর্ণা কালী বিদামন্দিরের প্রধান শিক্ষক দেবনাথ শিকদার বলেন, ‘‘স্কুল পুরোটাই খোলা ছিল। কিন্তু সকাল আটটা নাগাদ জানিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হবে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য শিক্ষকেরাও বলেন, ‘‘তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এক নেতা পরীক্ষা না নেওয়ার কথা জানান। ফলে জেলা বিদ্যালয় গুচ্ছ সংস্থার প্রশ্নে আর পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।’’ আবার এই সংগঠনের কাছে প্রশ্ন কেনা হাটগাছা, সাহাপুর, মায়াসুন্দরী, বৈদ্যপুর, আনুখালের স্কুলে নির্ধারিত সূচি মেনেই পরীক্ষা হয়েছে।

তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি রথীন মল্লিক বলেন, ‘‘আমদের সংগঠন কোনো প্রশ্ন করে না। যে সমস্ত স্কুল পরীক্ষা নেয়নি তাদের আমরা কোনো নির্দেশ দিইনি।’’ প্রশ্ন উঠছে, একই প্রশ্নপত্রে যাদের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, তার কিছু স্কুলে পরীক্ষা হওয়ায় বাকিদের কাছেও প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাবে না? রথীনবাবুর দাবি, স্কুলই সিদ্ধান্ত নেবে। তৃণমূল শিক্ষা সেলের সাধারন সম্পাদক দেবব্রত মণ্ডলও বলেন, ‘‘পরীক্ষা বন্ধের ব্যাপারে জেলা নেতৃত্ব কোনও লিখিত নির্দেশ দেয় নি। কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছাত্র অনুপস্থিতির কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ কাটোয়ার কাশীরামদাস বিদ্যায়তন, ডিডিসি গার্লস স্কুলে পরীক্ষা বাতিল হয় এ দিন। কাশীরাম দাস বিদায়তনের প্রধান শিক্ষক সুধীনকুমার মণ্ডল জানান, তৃণমূল শিক্ষা সেলের কাছ থেকে প্রশ্ন নেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন আসেনি। এবিটিএ প্রভাবিত সংস্থা ‘শিক্ষক সংসদ ট্রাষ্টে’র সম্পাদক শিবশঙ্করবাবু যদিও জানান, উচবিদ্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র সহ ২০০টি স্কুলে তারা প্রশ্নপত্র দেন। সেই সব জায়গাতেই পরীক্ষা হয়েছে।

Examination delayed strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy