Advertisement
E-Paper

শব্দ-তাণ্ডবে ওষ্ঠাগত প্রাণ, ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা অগ্রহায়ণ মাস জুড়ে মঙ্গলকোট, গোতিষ্ঠা, পালিগ্রাম, ঝিলু, লাখুরিয়া প্রভৃতি এলাকার নানা গ্রামে পালিত হচ্ছে নবান্ন উৎসব। আর এই উপলক্ষে কোনও শব্দবিধি না মেনে টানা তিন-চার দিন ধরে লাগাতার বাজছে সাউন্ডবক্স ও মাইক।

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
মাইক বেঁধে চলছে নাচ-গান। মঙ্গলকোটে। নিজস্ব চিত্র

মাইক বেঁধে চলছে নাচ-গান। মঙ্গলকোটে। নিজস্ব চিত্র

রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে সবে ঘুমোতে গিয়েছিলেন এক প্রবীণ। ঘুমোবেন কী, উল্টে মাথা যন্ত্রণা শুরু হল। কোথাও আবার বই খুলেই বিপত্তি। কানে তুলো গুঁজেও পড়াশোনায় মন বসানো দায় পড়ুয়ার। মাইক-তাণ্ডবে মঙ্গলকোট থানা এলাকায় এ ছবি ফি দিনের বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা অগ্রহায়ণ মাস জুড়ে মঙ্গলকোট, গোতিষ্ঠা, পালিগ্রাম, ঝিলু, লাখুরিয়া প্রভৃতি এলাকার নানা গ্রামে পালিত হচ্ছে নবান্ন উৎসব। আর এই উপলক্ষে কোনও শব্দবিধি না মেনে টানা তিন-চার দিন ধরে লাগাতার বাজছে সাউন্ডবক্স ও মাইক। অভিযোগ, এই শব্দ-যন্ত্রণা থামছে না রাতেও। সামনে বর্ষশেষ বা পৌষ সংক্রান্তির সময়েও এই উপদ্রব চলবে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন বাসিন্দারা।

অথচ এই সব এলাকার প়ড়ুয়ারা জানায়, ডিসেম্বরে নানা স্কুলেই পরীক্ষা চলছে। একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে শব্দ-তাণ্ডব পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এলাকাবাসীও। গোপালপুরের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তীর ক্ষোভ, “চোলাই মদ বা পোস্ত চাষের বিরুদ্ধে যে ভাবে অভিযান চালানো হয়, এ ক্ষেত্রেও তেমন অভিযান চালানো দরকার। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার।’’ আরও অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাউন্ড বক্স বা মাইক বাজানোর জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রও নেওয়া হয় না।

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকার চিকিৎসকেরাও। মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিক প্রণয় ঘোষ বলেন, “এ রকম শব্দ-তাণ্ডবে হৃদস্পন্দনের হার অত্যন্ত বেড়ে যায়। এর ফলে রক্ত সঞ্চালন কমে গিয়ে হার্টের নানা রকম সমস্যা দেখা যেতে পারে। এমনকী পেসমেকার বসানো থাকলে, তা বন্ধও হয়ে যেতে পারে।’’ চিকিৎসকেরা জানান, এর ফলে সবথেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে প্রবীণ নাগরিক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে। হৃদরোগ ছাড়া মানসিক চাপ, অবসাদ, শ্রবণ ক্ষমতা কমে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া, নিদ্রাহীনতা-সহ নানা রকমের শারীরিক সমস্যা দেখা যেতে পারে এমন শব্দ-যন্ত্রণায়।

যদিও প্রশাসনের দাবি, এ পর্যন্ত কেউ অভিযোগ না করায় অভিযান চালানো যাচ্ছে না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, ব্যবস্থা নিতে গেলে এলাকাবাসীর একাংশই তাতে বাধা দিচ্ছেন। যদিও মঙ্গলকোট থানার পুলিশকর্মীদের দাবি, কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে সাউন্ড বক্স আটক করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের জন্য নাগরিক সচেতনতার উপরেই জোর দিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। বিডিও (মঙ্গলকোট) মুস্তাক আহমেদ বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করতে না পারলে শুধুমাত্র প্রশাসনিক ভাবে এই দূষণ বন্ধ করা সম্ভব নয়।’’ আর যাঁরা এ ভাবে মাইক বাজাচ্ছেন তাঁদের দাবি, ‘‘এ তো দু’তিন দিনের জন্য!’’

Sound Pollution Noise Mike Sound Box মঙ্গলকোট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy