E-Paper

‘রুটিটা আর গিলতে পারিনি’

বুধবার সকালেই পাটনা থেকে ট্রেনে করে বর্ধমানে আসি। ব্যবসার কাজে বর্ধমান শহরে যাওয়ার কথা ছিল। সঙ্গে খাবার থাকায় ভাবলাম, একটু বসে খেয়ে যাই।

সোনে লাল, প্রত্যক্ষদর্শী

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৩২
সোনে লাল।

সোনে লাল। —নিজস্ব চিত্র।

সবে খাবারের প্যাকেটটা খুলে বসেছি। রুটির একটা টুকরো মুখে দিতেই ভারী একটা জিনিস পড়ল হাতে। ব্যথায় হাতটা কেমন অসাড় হয়ে গিয়েছিল। তখনও বুঝিনি আমারই আশেপাশে থাকা তিনটে মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। না জানি কত জন আহত হয়েছেন।

বর্ধমান স্টেশনে আসাযাওয়া করেছি অনেক বার। এত বড় স্টেশন, এত লোক, পুলিশ থাকে সব সময়। সবার চোখের সামনেই বিপদ ওঁত পেতে বসেছিল, বোঝা যায়নি। তবে জলের যা তোড় ছিল, ট্যাঙ্কটা পুরো ভেঙে পড়লে না জানি আরও কত জনের ক্ষতি হত।

বুধবার সকালেই পাটনা থেকে ট্রেনে করে বর্ধমানে আসি। ব্যবসার কাজে বর্ধমান শহরে যাওয়ার কথা ছিল। সঙ্গে খাবার থাকায় ভাবলাম, একটু বসে খেয়ে যাই। নাহলে আবার কখন খাওয়ার সময় পাব। তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটা ছাউনির নীচে বসে খাবারের প্যাকেট খুলি। পাশেই উপরের ট্যাঙ্কটা থেকে জল পড়ছিল। সেটা দেখে একটু সরে গিয়ে বসেছিলাম। সবে রুটি আর আলু-উচ্ছে ভাজা মুখে তুলেছি সঙ্গে সঙ্গেই উপর থেকে ভারী কিছু একটা ভেঙে পড়ল আমার ডান হাতে। শীতে, ব্যথায় কেমন যেন অসাড় হয়ে গেলাম। খাবারটা গিলতে পারিনি। উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা ছিল না আমার। চিৎকার, চেঁচামেচি, প্রচুর মানুষ আশেপাশে ছোটাছুটি করছিলেন। জল, রক্ত, লোহার বড় বড় থাম ভাঙা পড়ে ছিল। কারা এসে আমায় সরিয়ে নিয়ে গেল। তখনও ধাতস্থ হতে পারিনি। কী হল, কী ভাবে হল ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। তারপরে পুলিশ আমায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাতে প্লাস্টার হয়। সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র কিছুই পাইনি। মোবাইল নেই। আত্মীয় পরিজনদের কী করে খবর দেব জানি না। কেন যে হঠাৎ করে এমন হল!

ব্যবসার কাজে বর্ধমান আসি মাঝেমধ্যে। কাজ শেষ করে ট্রেন ধরে আবার ফিরে যাই। এ বার বাড়ি ফিরে গিয়ে আর কবে আসব জানি না। এলেও বিপদের ভয়টা থেকেই যাবে।

দেহ নিয়ে ‘অশান্তি’

বর্ধমান: ময়না-তদন্তের পরে বর্ধমান স্টেশনের দুর্ঘটনায় মৃত মফিজা খাতুনের দেহ বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন পরিজনেরা। কিন্তু রেলের তরফে শনাক্ত করার জন্য লার্কুর্ডির বাড়ি থেকে ফের দেহ আনতে বলা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় ফের দেহ মর্গে আনা হলে কাগজপত্র নিয়ে সমস্যা হয়। অশান্তি বাধে। বর্ধমান হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের কর্মী, রেল কর্তৃপক্ষ মিলে পরিস্থিতি সামাল দেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে দেহ নিয়ে যান পরিজনেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy