Advertisement
E-Paper

পাহাড়েই থাক স্বামীর দেহ: পরেশের স্ত্রী

এভারেস্ট থেকে কী ভাবে দুই পর্বতারোহীর দেহ ফিরিয়ে আনা যায়, ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু, স্বামীর দেহ পাহাড়েই থাক, চাইছেন দুর্গাপুরের পরেশচন্দ্র নাথের স্ত্রী সবিতাদেবী। নিজে দেহ দেখতে চান না, একমাত্র ছেলেকেও দেখাতে চান না তিনি।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০২:৫২

এভারেস্ট থেকে কী ভাবে দুই পর্বতারোহীর দেহ ফিরিয়ে আনা যায়, ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু, স্বামীর দেহ পাহাড়েই থাক, চাইছেন দুর্গাপুরের পরেশচন্দ্র নাথের স্ত্রী সবিতাদেবী। নিজে দেহ দেখতে চান না, একমাত্র ছেলেকেও দেখাতে চান না তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পাহাড়ে যাওয়াই ছিল ওঁর (পরেশবাবু) নেশা। হিমালয়ের কোলেই উনি থাকুন।’’ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে স্বামীর দেহ আনার বদলে সরকার তাঁর ছেলের পড়াশোনার জন্য কিছু অনুদান দিলে সুবিধে হয়, আর্জি তাঁর।

বারো বছর বয়সে দীপাবলিতে বাজি ফেটে বাঁ হাতের কব্জি থেকে নীচের অংশ উড়ে যায় পরেশবাবুর। তবে তা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ‘জওহর ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং’-এ পর্বতারোহণের প্রাথমিক পাঠের পরে ১৯৯১-এ হিমাচল প্রদেশের সিতিধর (৫,২৯৪ মিটার) শৃঙ্গে আরোহণ করেন। এর পরে ৭ হাজার মিটারের কম উচ্চতার প্রায় ৩০টি শৃঙ্গে অভিযান করেন। ২০১৪-এ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরের বছর নেপালে ভূমিকম্পের জন্য এভারেস্ট অভিযানে গিয়েও ফিরতে বাধ্য হন ৫৭ বছরের পরেশবাবু। ২০১৬-তে ফের সেখানেই যান। ২১ মে শৃঙ্গ জয়ে বেরিয়ে খারাপ আবহাওয়ায় পড়েন। ৩ দিনের বেশি নিখোঁজ থাকায় নিয়ম অনুযায়ী ২৪ মে তাঁকে মৃত ঘোষণা করে নেপাল সরকার। মৃত ঘোষণা করা হয় ব্যারাকপুরের পর্বতারোহী গৌতম ঘোষকেও।

প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর দেহটি মিললেও খারাপ আবহাওয়ার জন্য তা নামিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ৪ নম্বর বেস ক্যাম্পে দেহ রাখা ছিল। এ বছর রুট খোলার পরে দেহ সেখানেই দেখা গিয়েছে বলে শেরপারা জানান। কিন্তু সবিতাদেবী দেহ ফিরিয়ে আনতে চান না। ছেলে অদ্রিশিখর দুর্গাপুরের এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সবিতাদেবী বলেন, ‘‘ছেলেকে নিয়ে নিজের মতো বাঁচতে শুরু করেছি। আমি চাই, ছেলের মনে বাবার পুরনো ছবিটাই বেঁচে থাক।’’

পরেশবাবু পেশায় দর্জি ছিলেন। এখন সে কাজই করছেন সবিতাদেবী। বলেন, ‘‘আমি এ ভাবেই দু’পয়সা রোজগারের চেষ্টা করছি। প্রশাসন ছেলের পড়াশোনার জন্য অনুদান আর আমার একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিলে সুবিধে হয়।’’ পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্খ সাঁতরার আশ্বাস, ‘‘পরেশবাবুর স্ত্রী তাঁর আবেদন লিখিত ভাবে জানালে আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানাব, প্রয়োজনীয় তদ্বিরও করব।’’

Mountaineer Paresh Chandra Nath
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy