Advertisement
E-Paper

ফ্লাই অ্যাশ ফেলে জমি ‘ভরাট’

এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের জামুড়িয়ার তপসি থেকে চাকদোলা সেতু পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ফেলে সরকারি জায়গা ভরাট করে দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় ভাবে ‘পরিচিত’ কয়েকজন মুখ

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০০:৩৮
তপসি এলাকায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে জমে রয়েছে ছাই। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

তপসি এলাকায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে জমে রয়েছে ছাই। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

রাতে রাস্তার পাশে, জলাশয়ে ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ফেলে জমি সমতল করা হচ্ছে। এ ভাবে সরকারি জমিও দখল করছে ‘জমি মাফিয়ারা’। এমনই অভিযোগ করেছেন পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। বিডিও (জামুড়িয়া) কৃশাণু রায়ের আশ্বাস, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের জামুড়িয়ার তপসি থেকে চাকদোলা সেতু পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ফেলে সরকারি জায়গা ভরাট করে দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় ভাবে ‘পরিচিত’ কয়েকজন মুখ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘ফ্লাই অ্যাশ’ রাস্তার পাশে ফেলার ফলে, তা বাতাসে উড়ছে। বাড়ছে বায়ুদূষণ। তপসি, ভূতবাংলা, ধসল, চাকদোলা পেট্রল পাম্প লাগোয়া এলাকায় কয়েকটি জলাশয়, ভূতবাংলা মোড়ের কাছে সড়কের গা ঘেঁষা ইসিএল-এর পরিত্যক্ত বেলবাঁধ খোলামুখ খনিতে ছাই ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ফেলা হচ্ছে। এতে খনি ভরাট হলেও বিপত্তি আরও বেড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা অসীম ঘোষ, মিলন মাজিরা জানান, সরকারি খাস জমি এর ফলে বেহাত হচ্ছে। চাষজমির উর্বরতা নষ্ট হয়েছে। এলাকার পরিবেশের পাশাপাশি, বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যেও প্রভাব পড়ছে। বাড়িতে ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ঢুকে বিপত্তি বাড়ছে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) আসানসোল শাখার সভাপতি শ্যামল সান্যাল জানান, ‘‘কয়লার ছাইয়ে কার্বনের সুক্ষ্ম গুঁড়োর পরিমাণ অনেক বেশি। এ থেকে মানব দেহে ‘ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা’, ‘সিওপিডি’, এমনকি, ক্যানসারও হতে পারে।’’

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নিদের্শিকা অনুযায়ী, পরিত্যক্ত খনি ভরাট করার জন্য অনুমতি সাপেক্ষে ছাই ফেলা যাবে। এ ছাড়া, ইট ও সিমেন্ট তৈরির কাজেও ব্যবহার করা যাবে।

কিন্তু এই ‘ফ্লাই অ্যাশ’ কারখানাগুলি থেকে জোগাড় করা হচ্ছে কী ভাবে? রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুক এবং জামুড়িয়ার ইকড়া শিল্পতালুকে থাকা আটটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার নিজস্ব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। সেখান থেকে এই ‘ফ্লাই অ্যাশ’ তৈরি হয়। যদিও ‘জামুড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজ়’-এর সম্পাদক অজয় খেতানের দাবি, ‘‘কারখানাগুলি ইসিএল-এর অনুমতি নিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে পরিত্যক্ত খনিতেই ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ফেলে। জামুড়িয়ার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা ‘ফ্লাই অ্যাশ’ থেকে ইট তৈরি করছে। যত্রতত্র ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ফেলার অভিযোগ কারখানার বিরুদ্ধে কেউ জানাননি।’’ যদিও বিজেপির মণ্ডল সভাপতি (জামুড়িয়া ২) গৌতম মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের প্রত্যক্ষ মদতে ‘ফ্লাই অ্যাশ’ জোগাড় করে জমি দখল করছে মাফিয়ারা।’’ একই অভিযোগ জামুড়িয়ার সিপিএম বিধায়ক জাহানারা খানেরও। যদিও তৃণমূলের অন্যতম জেলা মুখপত্র অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘এর সঙ্গে দলের কোনও যোগসূত্র নেই।’’

Land Dispute West Burdwan Corruption
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy