প্রতীকী ছবি।
ভোরের ফাঁকা রাস্তায় একটি ট্রাককে ওভারটেক করে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল ছোট মালবাহী গাড়িটি। পিছন থেকে সেই ট্রাকের ধাক্কাতেই প্রাণ হারালেন গাড়ির চার যাত্রী। বুধবার ভোরে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার গৌরাঙ্গ রোড মোড়ে ওই ঘটনায় আহত হন আরও জনা সাত।
মৃতরা হলেন অশোক পোদ্দার (৪২), বাদলচন্দ্র দত্ত (৫০), সাগরিতা সিংহ (৫৫) ও রামপ্রসাদ নায়েক (৩৩)। এঁরা প্রত্যেকেই কেউ আনাজ বিক্রি করতে, কেউ মাছ কিনতে বা অন্য কাজে বাজারে যাচ্ছিলেন। দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই গাড়িতে ১১ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। গাড়িগুলিকে আটক করা হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত অশোকবাবুর বাড়ি খণ্ডঘোষের চন্দ্রপল্লিতে। পুরনো চটের বস্তা, টিন বিক্রি করেন তিনি। এ দিন ছোট ছেলে, সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া আমনকে নিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন তিনি। আমন জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। ওই গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে জরুল গ্রামের বাসিন্দা বাদলবাবুও অন্য দিনের মতো পলেমপুরের পাইকারি বাজার থেকে সব্জি কিনতে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন গ্রামেরই জগবন্ধু দত্ত। তিনিও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্ধমান শহরের তেঁতুলতলা বাজার থেকে পাইকারি দরে মাছ কিনতে আসছিলেন খণ্ডঘোষের সাঁকো গ্রামের মা-ছেলে সাগরিতাদেবী ও বাপন। সাগরিতাদেবী ঘটনাস্থলে মারা যান, জখম হন বাপনও। রায়নার বেন্দুয়া গ্রামের বাস কর্মচারী রামপ্রসাদ নায়েকও ওই গাড়িতে কর্মসূত্রে বর্ধমান যাচ্ছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে তিনি মারা যান।
আহতরা জানান, ভোরের দিকে বাস কম থাকে। ফলে অনেকেই ছোট মালবাহী গাড়িতে বর্ধমান যান। ওই গাড়িই ফেরার পথে আনাজ নিয়ে বিভিন্ন বাজারে নামায়। এ দিন ভোরে রায়নার সেহরাবাজার থেকে যাত্রীবোঝাই মালবাহী গাড়িটি বর্ধমান রওনা দেয়। রাস্তাতেও একাধিকবার যাত্রী তোলে। বর্ধমান-আরামবাগ রাজ্য সড়কের বাবরকপুর খাল পেরনোর পরেই ফাঁকা ট্রাকটিকে ওভারটের করে গাড়িটি। তারপরে গৌরাঙ্গ মোড়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল। তখনই পিছন থেকে প্রচন্ড গতিতে এসে ধাক্কা মারে ট্রাকটি। ধাক্কায় প্রায় ১০০ ফুট ছেঁচড়ে যায় গাড়িটি। তারপরে একটি অস্থায়ী ঘর, টেলিফোনের খুঁটিতে ধাক্কা মেরে একটি গাছের গোড়ায় আটকে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। এলাকার বাসিন্দা শেখ লাল্টু, রাজেশ মীরদের দাবি, “প্রচন্ড আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। ছুটে এসে দেখি গাড়ির ভিতর সবাই শুয়ে কাতরাচ্ছে। আমরা তাঁদের উদ্ধার করে গুরুতর জখমদের বর্ধমানে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy