Advertisement
E-Paper

সম্মেলনের আগের রাতে দ্বন্দ্ব তৃণমূলে

সংঘর্ষের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া এলাকার কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্য ও প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর অঞ্জন মণ্ডলের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৫
জামুড়িয়ায় কেন্দা মাঠে সম্মেলনে অরূপ বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

জামুড়িয়ায় কেন্দা মাঠে সম্মেলনে অরূপ বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

কেন্দা ফুটবল মাঠে বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের প্রথম কর্মী সম্মেলন হয়। মঞ্চ থেকে জেলার পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস দলীয় কর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার নির্দেশ দেন।

শুধু তাই নয়, অরূপবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের দলে গোষ্ঠী কলহ নেই। আছে— কে কত উন্নয়ন করতে পারবে তা নিয়ে লড়াই।’’ অথচ এই সম্মেলনের ঠিক আগের দিন রাতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কুলটির ডিসেরগড় অঞ্চল। খবর পেয়ে এলাকায় যায় সাঁকতোড়িয়া থানার পুলিশ। দু’পক্ষই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া এলাকার কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্য ও প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর অঞ্জন মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকেই গ্রেফতার করেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১১টা নাগাদ সরস্বতী প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে গ্রামে ফিরছিলেন সাঁকতোড়িয়া গ্রামের একদল যুবক। ডিসেরগড় রোড লাগোয়া তৃণমূল কার্যালয়ের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। সেখানে উপস্থিত একদল তৃণমূল সদস্য-সমর্থকের সঙ্গে ওই যুবকদের বচসা বাধে। পরে দু’পক্ষ বাঁশ-লাঠি নিয়ে একে অপরের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খবর পেয়ে সদলবলে ঘটনাস্থলে পৌঁছন তৃণমূলের দুই নেতা অভিজিৎ আচার্য ও অঞ্জন মণ্ডল। তাঁদের উপস্থিতিতেই মারমারি চলতে থাকে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে উভয় পক্ষ সাঁকতোড়িয়া ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ জানায়।

সংঘর্ষের কারণ কী?

বর্তমান কাউন্সিলর অভিজিতবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলেরা প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে ফিরছিলেন। হঠাৎই তৃণমূলের অফিস থেকে অঞ্জন মণ্ডলের ছেলেরা তাদের গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করতেই মারামারি শুরু হয়।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করে এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর অঞ্জনবাবু। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলেরা দলীয় কার্যালয়ে বসেছিল। অভিজিতের ছেলেরা বিসর্জন দিয়ে ফেরার পথে আমাদের দলীয় অফিসে বাজি ছোড়ে ও দরজায় লাথি মারে। এর প্রতিবাদ করায় মারামারি বেঁধে যায়।’’

প্রসঙ্গত, কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত অঞ্জনবাবুর সঙ্গে এলাকার বর্তমান কাউন্সিলর অভিজিতবাবুর এই বিবাদ বেশ পুরনো। ২০১৫ সালের পুরভোটে কংগ্রেসের প্রার্থীপদে জেতা অভিজিতবাবু গত বিধানসভাতেও কংগ্রেসের হয়ে কুলটিকেন্দ্রে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকা দখল ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা নিয়ে তৃণমূল তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর অঞ্জনবাবুর সঙ্গে বারবার সংঘর্ষে জড়িয়েছেন অভিজিতবাবু। মাস তিনেক আগে শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন অভিজিতবাবু। কিন্তু এরপরেও জিতেন্দ্র অনুগামী অভিজিতবাবুর সঙ্গে অঞ্জনবাবুর বিবাদ একেবারে থামেনি। উল্টে এলাকায় দু’পক্ষের বিবাদ
আরও বেড়েছে।

বুধবার রাতে এই দুই গোষ্ঠীর বিবাদ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘আমাদের দলে গোষ্ঠীবাজির কোনও জায়গা নেই। সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ঠিক কী হয়েছে তা খোঁজ
নিয়ে দেখব।’’

তিনি জানান, ২১ জানুয়ারি রানিগঞ্জের রেলমাঠে যেখানে বিজেপি সভা করেছিল, ঠিক সেই মাঠেই আগামী ২৮ জানুয়ারি তৃণমূলের সভা হবে। সেখানে জেলার সব বিধায়ক উপস্থিত থাকবেন। দলীয় কোন্দল মিটিয়ে নিয়ে লড়াই-আন্দোলন সংগঠিত করার উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয় এ দিন।

TMC Aroop Biswas অরূপ বিশ্বাস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy