Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bangla Awas Yojana

লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক বাড়ি তৈরি হয়নি

পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনেরই পরিসংখ্যান বলছে, এ পর্যন্ত বাড়ি তৈরি হয়েছে প্রায় ১১ হাজার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ০১:৩৫
Share: Save:

বিপিএল তালিকাভুক্ত বাসিন্দাদের জন্য ‘বাংলা আবাস যোজনা’ প্রকল্পে ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবর্ষে জেলায় মোট প্রায় ২৪ হাজার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনেরই পরিসংখ্যান বলছে, এ পর্যন্ত বাড়ি তৈরি হয়েছে প্রায় ১১ হাজার।

পরিসংখ্যানটি সামনে আসতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিস্মিত। বিডিও-দের দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছি। তিন মাস পরে কাজের অগ্রগতির পর্যালোচনা করা হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ির দাবি ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে জনপ্রতিনিধিদের কানেও। সম্প্রতি বারাবনিতে কয়েকটি গ্রামে যান তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। তাঁর কাছে অধিকাংশ বাসিন্দা সরকারি অনুদানে বাড়ি তৈরির আর্জি জানান। অনেকেই অভিযোগ করেন, বিষয়টি পঞ্চায়েতে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। বিধানবাবু প্রয়োজনীয় আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘গ্রামে বসবাসকারী বিপিএল তালিকাভুক্ত বহু বাসিন্দারই মাথার উপরে পাকা ছাদ নেই। সমস্যা মেটাতে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে।’’ পাশাপাশি, জেলাশাসকও কয়েকটি গ্রামে গিয়ে একই দাবির সম্মুখীন হন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। পূর্ণেন্দুবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাস যোজনা প্রকল্পে চলতি অর্থবর্ষে (২০২০-২১) জেলার আটটি ব্লকে মোট ৫,৮৫৫টি বাড়ি তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ১,৮৫৮ জন উপভোক্তার নাম নথিভুক্ত হয়েছে। ১,০৫৫ জন উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, ব্লক প্রশাসন এ পর্যন্ত বাড়ি তৈরির প্রাথমিক কাজও করতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন বিডিও-র দাবি, ‘‘লকডাউনের জেরে কাজ এগোয়নি। তবে অক্টোবরের মধ্যেই প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হবে।’’

কিন্তু প্রশ্ন হল, এ বার না হয় ‘লকডাউন’-পরিস্থিতি রয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮,১৪৮টি। তৈরি হয়েছে মাত্র ১,৫৯৪টি (১৯.৫৬ শতাংশ)। এটা কেন ঘটল? জেলাশাসকের দাবি, ‘‘কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিডিওদের সমস্যা-সহ পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে জেলাশাসকের দফতরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ১০ হাজার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তৈরি হয়েছে, প্রায় ৯,৫৪৩টি বাড়ি। সে বছর কাজের নিরিখে সব থেকে এগিয়ে জামুড়িয়া ব্লক। সব থেকে পিছিয়ে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক।

এ দিকে, প্রকল্প সংক্রান্ত এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের টাকা পুরোটাই কেন্দ্র দেয়। অথচ, রাজ্য প্রকল্পের নাম বদল করেছে। আবার টাকা পেয়েও বাড়ি বানানো হচ্ছে না।’’ সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীও বলেন, ‘‘কাগজ-কলমের হিসেবই বলে দিচ্ছে এই সরকারের আমলে উন্নয়নের কী পরিস্থিতি।’’ যদিও, তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিরোধীদের কাজ শুধুই বিরোধিতা করা। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের সাফল্যটা ওদের চোখে পড়ল না। মানুষ জানেন উন্নয়ন কতটা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangla Awas Yojana TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE