Advertisement
E-Paper

নিকাশি, গরিবের ঘর তৈরি নিয়ে সরব বাম

প্রশ্ন উঠছে দেওয়ালে। উত্তরও মিলছে দেওয়ালে। রাত জেগে লেখাজোকার পর্ব প্রায় শেষ। মোড়ে মোড়ে ফেস্টুন ঝোলানোও অনেকটাই সারা। ভোট চাইতে পথে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। অনু্ন্নয়ন কোথায় কোথায়, দেওয়ালে ফর্দ দিয়েছে বিরোধী। পাঁচ বছরে কাজ কী হল, ফিরিস্তি লিখে দিয়েছে শাসকপক্ষও। তাই গরম যত বাড়ছে পুরভোটের উত্তাপও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫৩
অভিযোগ দেওয়ালে। জবাবও সেখানেই। কালনায় মধুমিতা মজুমদারের তোলা ছবি।

অভিযোগ দেওয়ালে। জবাবও সেখানেই। কালনায় মধুমিতা মজুমদারের তোলা ছবি।

প্রশ্ন উঠছে দেওয়ালে। উত্তরও মিলছে দেওয়ালে।

রাত জেগে লেখাজোকার পর্ব প্রায় শেষ। মোড়ে মোড়ে ফেস্টুন ঝোলানোও অনেকটাই সারা। ভোট চাইতে পথে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। অনু্ন্নয়ন কোথায় কোথায়, দেওয়ালে ফর্দ দিয়েছে বিরোধী। পাঁচ বছরে কাজ কী হল, ফিরিস্তি লিখে দিয়েছে শাসকপক্ষও। তাই গরম যত বাড়ছে পুরভোটের উত্তাপও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

২০১০-এর আগে পর্যন্ত কালনা পুরসভা ছিল বামেদের শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু সেই বছর তাদের সরিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট। এর পরে বিধানসভা, লোকসভা নির্বাচনে ভোটের হার আরও কমেছে বামেদের। পাঁচ বছর বিরোধী আসনে থাকার পরে এ বার তারা পুরসভা পুনর্দখলের লড়াইয়ে নেমেছে। আর তাতে তারা হাতিয়ার করেছে এই পুরবোর্ডের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার অভিযোগকে।

বামেদের দাবি, কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট পরিচালিত পুরবোর্ডের আমলে শহরে যথচ্ছ ভাবে পুকুর বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। এর ফলে নিকাশি সমস্যা শহরে ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটুজলে ডোবে শহর। দেওয়াল লিখনে বামেরা অভিযোগ করেছে, তাদের সময়ে শহরের বাইরে একটি ৮ বিঘা জমি জঞ্জাল ফেলার জন্য কেনা হয়েছিল। জোট পরিচালিত বোর্ড সেই জমি বিক্রি করে দেয়। তাতে জঞ্জাল ফেলার সমস্যা বাড়ে।

গরিব মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি করা নিয়েও সরব হয়েছে বামেরা। তাদের দাবি, তাদের আমলে স্বল্পমূল্যে হাজারেরও বেশি গরিব মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল। গত বার তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের প্রতিশ্রুতি ছিল, কোনও মূল্য ছাড়াই তারা গরিব মানুষের জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। অথচ, গত পাঁচ বছরে গরিব মানুষদের জন্য পুরসভা কোনও বাড়ি তৈরি করেনি বলে অভিযোগ। পানীয় জল পরিষেবা নিয়েও এই বোর্ডকে বিঁধতে ছাড়েনি বামেরা। তারা দাবি করেছে, গত বার ভোটের আগে প্রচারের সময়ে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, ১২ ঘণ্টার জল পরিষেবা পাবেন শহরবাসী। সে প্রতিশ্রুতিও রাখেনি এই পুরবোর্ড।

এ ছাড়া বিপিএল তালিকায় গরিব মানুষের নাম তোলা, মহিলা কলেজ তৈরি, পুরনো বাসস্ট্যান্ডে বাস ফিরিয়ে আনার মতো প্রতিশ্রুতিও রাখা হয়নি বলে দেওয়াল লিখনে অভিযোগ করেছে বামেরা। ব্যানার, ফেস্টুনে স্থানীয় এই সব সমস্যা ছাড়াও কোথাও টেট কেলেঙ্কারি বা সারদা-কাণ্ড, আবার কোথাও নানা কেন্দ্রীয় নীতির সমালচনা করে বামেরা কালনা পুরসভায় ফের ক্ষমতা দখলের ডাক দিয়েছে। সিপিএমের কালনা জোনাল সদস্য স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় অভিয়োগ করেন, ‘‘পাঁচ বছর গঠনমূলক কোনও উন্নয়ন করেনি এই পুরবোর্ড। নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করেই ওরা সময় কাটিয়ে দিয়েছে।’’ শুধু দেওয়াল লিখন নয়, এ সব কথা জনসভা, পথসভাতেও তুলে ধরা হচ্ছে বলে জানান তিনি। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ গোস্বামী দাবি করেন, ‘‘ভাগীরথীর জল পরিস্রুত করে বাড়ি-বাড়ি বিলি, দ্বিতীয় চুল্লি তৈরির প্রস্তাব তো আমাদের সময়ের। জল প্রকল্পের কাজ যে ধীর গতিতে চলছে তা কবে শেষ হবে, ঠিক নেই।’’

শাসকপক্ষ আবার দেওয়ালে হাজির উন্নয়নের পাল্টা ফিরিস্তি নিয়ে। ত্রিফলা আলোয় শহর সাজা, আরবান হাট, দ্বিতীয় বৈদ্যুতিক চুল্লি, রাজবাড়ি চত্বরে সৌন্দর্যায়ন, বাড়ি বাড়ি জঞ্জাল সাফাই, রাস্তা তৈরি, পানীয় জলের পাম্প বসানো-সহ বহু উন্নয়নমূলক কাজ গত পাঁচ বছর ধরে হয়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, এই শহরকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য তৈরি করা হয়েছে প্রবেশদ্বার। বিদায়ী পুরপ্রধান তথা এ বার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, ‘‘বিরোধীরা কী বলছে জানি না। তবে পুরসভা সাধারণ মানুষের স্বার্থে প্রচুর কাজ করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই গত বোর্ডের থেকে কাজ হয়েছে দ্বিগুণ। মানুষ নিশ্চয় কাজের মূল্যায়ন করবেন।’’

municipal election Trinamool CPM Home for poor Kalna congress BPL
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy