ধানুবালাদেবী। —নিজস্ব চিত্র।
ভাঙা পায়ে কোনও রকমে অন্যের সাহায্যে হাঁটাচলা করেন। কখনও আধপেটা, কোনদিন অনাহারেই কাটে বছর ষাটের এই বৃদ্ধার। কাটোয়ার ধানুবালা দাস নামে ওই বৃদ্ধার অভিযোগ, মেয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পরে এভাবেই দিন কাটছে তাঁর। সোমবার বাড়িতে বসবাস করার আর্জি জানিয়ে মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
ধানুবালাদেবী জানান, বছর তিনেক আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিন নম্বর ওয়ার্ডে অজয়পল্লির এক কামরা বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। স্বামীর গচ্ছিত অর্থে কোনওরকমে খাওয়া-পরা চলত। তার মধ্যেই একটি দুর্ঘটনায় বাঁ পা ভাঙে। সেই সময়েই বড় মেয়ে আশালতা দাসের নামে বাড়িটি লিখে দেন তিনি। বৃদ্ধার অভিযোগ, দু’বছর আগে বাড়ি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার পর থেকেই মেয়ে-জামাই দেখে না। এক কাঠা জায়গার উপর তৈরি ওই বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে বৃদ্ধা মাকে রাস্তায় বের করে দেয় তাঁরা। এরপর থেকে রাস্তাতেই দিন কাটে তাঁর। বৃদ্ধা জানান, দিনের বেলায় আশ্রম থেকে আসা খাবার ভরসা। আর কোনও দিন খাবার না এলে অনাহারেই দিন কাটে। রাতে থাকেন ঘুটকিয়াপাড়ার বাসিন্দা ছোট মেয়ে জোৎস্না মণ্ডলের বাড়িতে। এ দিন মহকুমাশাসকের দফতরে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘ছোট জামাই কাঁসা পিতলের কারখানায় শ্রমিকের কাজ করে। ওর আর্থিক ক্ষমতা নেই আমায় পুরোপুরি বাড়িতে রাখার। বাড়িটা বড় মেয়েকে বিশ্বাস করে দিলাম। আর আমাকেই এখন পথে বসিয়ে দিল।’’ বৃদ্ধা জানান, ঠিকমতো চলাফেরা করতে না পারায় বিধবা ভাতা বা অন্য কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধে কীভাবে পেতে হয়, তাও জানেন না তিনি। কোথাও আবেদনও করতে পারেননি।
যদিও ধানুবালাদেবীর বড় জামাই, দুর্গাপুরের বাসিন্দা হরেকৃষ্ণ দাসের দাবি, ‘‘উনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ওনাকে হাজার পঞ্চাশেক টাকা দিয়েছিলাম বাড়ি তৈরির জন্য।’’ মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy