Advertisement
E-Paper

উপচে পড়া ভিড়, তবু ভাটা ব্যবসায়

বৈঠকের মঞ্চের কাছেই মাঠ। সেখানেই চক্কর কাটতে কাটতে নামল হেলিকপ্টার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কপ্টার থেকে নামতেই শোনা গেল ঢাকের বোল। ছন্দে ছন্দে পা মেলালেন নানা ঘরানারা লোকশিল্পীরা। মঙ্গলবার গুসকরার শিবদায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক ঘিরে এমনই ‘মেজাজ’ ছিল লাগোয়া এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০২:১১
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে ২বি জাতীয় সড়কের পাশে ভিড়। ছবি: সুপ্রকাশ চৌধুরী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে ২বি জাতীয় সড়কের পাশে ভিড়। ছবি: সুপ্রকাশ চৌধুরী

বৈঠকের মঞ্চের কাছেই মাঠ। সেখানেই চক্কর কাটতে কাটতে নামল হেলিকপ্টার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কপ্টার থেকে নামতেই শোনা গেল ঢাকের বোল। ছন্দে ছন্দে পা মেলালেন নানা ঘরানারা লোকশিল্পীরা। মঙ্গলবার গুসকরার শিবদায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক ঘিরে এমনই ‘মেজাজ’ ছিল লাগোয়া এলাকায়। তবে এই উৎসবের মেজাজের তাল কেটেছে বিক্রিবাটা ভাল না হওয়ায়, দাবি বিক্রেতাদের।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর পৌঁছনোর কথা ছিল দুপুর সাড়ে চারটে নাগাদ। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ২টো ৪০ মিনিটে এলাকায় পৌঁছে যান তিনি। তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য তৈরি ছিলেন আদিবাসী নৃত্য, রায়বেঁশে, ঢাকি, বাউল-সহ নানা ক্ষেত্রের মোট ১৪০ জন লোকশিল্পী।

স্থানীয়েরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে এই প্রথম গুসকরা বা তার লাগোয়া এলাকায় এলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁকে একটিবার দেখতে মানুষের ভিড়, উৎসাহ ছিল নজরে পড়ার মতো। এ দিন সকাল থেকে গুসকরা শহর-সহ আউশগ্রাম ১ ব্লকের লোকজন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য বৈঠক-স্থলের কাছেই বর্ধমান-সিউড়ি জাতীয় সড়কের (এনএইচ ২বি) আশপাশে ভিড়় জমে যায়।

সে ভিড়়ের মেজাজ মালুম পড়ে দেয়াশা গ্রামের শোভা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেয়া বন্দ্যোপাধ্যায়দের কথায়। তাঁরা বলেন, ‘‘চার কিলোমিটার দূর থেকে এসেছি, দিদিকে দেখব বলে। দুপুর একটা থেকে বসে রয়েছি।’’ পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ঝারুল গ্রামের বাসিন্দা বুদিন হাঁসদা, রিনা হাঁসদারা। তাঁদের কথায়, ‘‘আদিবাসীদের জন্য অনেক কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাড়িতে টেলিভিশন নেই, তাই ১২ কিলোমিটার দূর থেকে তাঁকে দেখতে এসেছি।’’— হেলিকপ্টার থেকে নেমে ভিড়ের দিকে কখনও নমস্কার, কখনও বা হাত নাড়তে নাড়তে বৈঠক-মঞ্চের দিকে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকের পরে গাড়িতে চড়ে বোলপুরের দিকে রওনা দেন তিনি। সেখানেও রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকা জনতাকে অভিবাদন জানান তিনি। পুলিশ গাড়ির কাছে জনতাকে ঘেঁষতে বাধা দেয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বাধা সরিয়ে নেওয়া হয়।

তবে উৎসবের এই মেজাজের তাল কেটেছে ঠিকমতো কেনাকাটা না হওয়ায়। বৈঠক-মঞ্চের চারদিকে গজিয়ে ওঠে অজস্র ছোট-বড় অস্থায়ী দোকান। তাঁদের সকলেরই এক রা, বিক্রি তেমন হয়নি। যেমন, আইসক্রিম আর ঠান্ডা জলের পসরা নিয়ে এসেছিলেন পঙ্কজ পোদ্দার। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁচ হাজার টাকা জিনিস কিনেছিলাম। কিন্তু ৫০০ টাকাও বিক্রি হয়নি।’’ একই কথা বলেন কাছেই থাকা অপর্ণা মিত্রও। শসা-বিক্রেতা হরিপদ গাইন কিংবা ডাব-বিক্রেতা সঞ্জয় দাসেরাও বলেন, ‘‘বিক্রিবাটা একেবারেই নেই।’’

কিন্তু বিক্রির এই হাল কেন? বিক্রেতাদের কয়েক জনের ব্যাখ্যা, জনসভায় যে রকম মানুষ আসেন, তার তুলনায় প্রশাসনিক বৈঠকে লোকের সংখ্যা অনেকটা কম। বৈঠকে যোগ দেওয়া সকলেই আমন্ত্রিত বা প্রশাসনের কর্তা। তাঁরাও রাস্তায় নেমে জিনিসপত্র কেনেননি। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক-মঞ্চে ঢুকে যাওয়ার পরেই ভিড় জমানো লোকজনের একাংশ রওনা দেন বাড়ির দিকে। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘কী আর কিনব বলুন তো, এই তো বাড়ি থেকে খেয়ে বেরোলাম।’’

Mamata Banerjee Administrative Meeting Business Public মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy